৭০ শতাংশ লোককে টিকার আওতায় না আনতে পারলে মহামারির অবসান ঘটানো যাবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) ইউরোপীয় বিষয়ক পরিচালক সতর্ক করে বলেছেন,
গত এক বছর ধরে বিশ্বজুড়ে মানবদেহে সংক্রমিত হতে হতে কয়েকবার অভিযোজনের (মিউটেশন) মধ্যে দিয়ে গেছে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাস। এর ফলে এই ভাইরাসটির একাধিক প্রজাতি বা ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) উদ্ভব ঘটেছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে নতুন প্রজাতি বা ধরনগুলো প্রচলিত সার্স-কোভ-২ মূল ভাইরাসটির তুলনায় অনেক বেশি প্রাণঘাতী ও উচ্চ সংক্রমণশীল।
এএফপি’র হিসেব মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের ৫৩টি দেশের মোট জনসংখ্যা মাত্র ২৬ শতাংশ লোক টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। এসব অঞ্চলের মধ্যে মধ্য এশিয়ার কিছু দেশও রয়েছে।
ডব্লিওএইচও’র ইউরোপ বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নূন্যতম ৭০ শতাংশ লোককে আমরা টিকা দিতে না পারলে মহামারি শেষ হবে না। বিশ্বজুড়ে গণটিকাদান কর্মসূচি কাঙ্খিত মাত্রার তুলনায় অনেক ধীরগতিতে চলছে। পাশাপাশি, করোনাভাইরাসের বিভিন্ন অভিযোজিত ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) উদ্ভব ও এগুলোর উচ্চ সংক্রমণক্ষমতার প্রেক্ষিতে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, নভেল করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে তার মূল উদ্বেগ।
শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এএফপিকে হ্যান্স ক্লাগ বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই মানুষের মধ্যে এক প্রকার গা ছাড়া মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারি শেষ হয়ে গেছে, কিংবা যাচ্ছে— এমন চিন্তা-ভাবনা করার কোনো সুযোগ এখন পর্যন্ত নেই। বিশ্বের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার আগ পর্যন্ত এই মহামারি নির্মূল হবে না।’
সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হ্যান্স ক্লাগ আরো বলেন, ‘এই ব্যাপারটি সত্যিই খুব উদ্বেগের, কারণ আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি প্রচলিত সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির তুলনায় এর ব্রিটিশ ভ্যারিয়েন্ট বি.১১৭ এর সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি।’
‘আবার, এখন দেখা যাচ্ছে— ভাইরাসটির ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি.১৬১৭ এর ক্ষয়ক্ষতির ক্ষমতা ব্রিটিশ ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি।’
হ্যান্স ক্লাগ
আমাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু -গতি। সময় আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। অথচ টিকা দেয়ার গতি খুব ধীর। এ গতি ত্বরান্বিত করা দরকার।
হ্যান্স ক্লাগ
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মোট ৩৬.৬ শতাংশ লোক টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে।