ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা মন্দাভাব চলার পর সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। রয়টার্সের এক প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, এই দিন অপরিশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেলে ২১ সেন্ট বেড়ে হয়েছে ৯২ দশমিক ৫ ডলার এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ৬ সেন্ট বেড়ে হয়েছে ৮৫ দশমিক ৬৭ ডলার।
শতকরা হিসেবে এদিন ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে যথাক্রমে দশমিক ২ শতাংশ ও দশমিক ১ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষক সংস্থা ভান্দা ইনসাইটসের কর্মকর্তা বন্দনা হরি রয়টার্সকে বলেন, ‘শুক্রবার ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই ক্রুড তেলের দাম ৩ থেকে ৪ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল। তারপর এই উত্থান বাজারের জন্য আশাব্যাঞ্জক ঠিকই, কিন্তু এই অবস্থা কতদিন থাকবে সেটি বড় প্রশ্ন।’
‘কারণ, বাজারের কোনো গুণগত পরিবর্তন এখনও লক্ষ্য করা যায়নি। আর আজকের দাম বৃদ্ধির ফলে বাজারে পরিবর্তন আসবে, এমন সম্ভাবনা নেই।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে রুশ বাহিনী যে সময় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করল, সে সময় ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল জ্বালানি তেলের বাজার। প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম তখন উঠেছিল ১৪৭ ডলার, ইতিহাসে এর আগে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এত বাড়েনি।
কিন্তু তারপর গত জুন মাস থেকে পড়তে থাকে তেলের দাম। একই সময়ে ডলারের মানও বাড়তে থাকে, এবং আন্তর্জাতিক তেলের বাজার প্রায় সম্পূর্ণ ডলার নির্ভর হওয়ায় বিদেশি মুদ্রার মজুত রক্ষার্থে তেল কেনার পরিমাণ কমিয়ে দেয় উন্নয়নশীল বিশ্বের বহু দেশ।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকদের মতে, তেলের বাজারে মন্দাভাবের একটি বড় কারণ চীনের তেল কেনা কমিয়ে দেওয়া। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীনের সরকারের নেওয়া ‘জিরো কোভিড’ নীতি প্রভাবে দেশটিতে শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন কমে গেছে, ফলে জ্বালানি তেলের চাহিদাও কমে গেছে সেখানে।
তবে সোমবার চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চীনের সরকার কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জরুরি পণ্যসমূহ মজুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই হিসেবে সামনে বিশ্ব বাজার থেকে জ্বালানি সম্পদ কেনার পরিমাণ আরও বাড়াবে দেশটি।
এদিকে তেলের বাজারে মন্দাভাব থাকায় জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশসমূহের প্রতিষ্ঠান ওপেক প্লাসি সম্প্রতি দৈনিক তেলের উত্তোলন ২০ লাখ ব্যারেল তেল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । শতকরা হিসেবে এটি প্রতিদিন উত্তোলিত তেলের ২ শতাংশ।