নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান ) ২০১০ আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকসহ বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (২১সেপ্টম্বর) কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এ ভার্চুয়াল নাগরিক সভায় বক্তরা এ দাবি জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান। সভাটি পরিচালনা করেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ রাজু।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাম রহমান ক্যাবের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দ্রুতসরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষবিধান) আইন ২০১০ বাতিলের দাবী করা হয়।
তবে বিশেষ কোন ক্ষেত্রে সুইচ চ্যালেঞ্জমাধ্যমে আনসলিসিটেড কোন প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে।কোন ভাড়া কিংবা দ্রুতভাড়া বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ কোন ভাবেই আরবৃদ্ধি না করার দাবী করা হয়।
এলপিজিসহ পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা বিইআরসির নিকট থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগের ব্যাপারে নিন্দা জানিয়ে উক্ত ক্ষমতা সরিয়ে না নেয়ার দাবী করা হয়।
ইউটিলিটির চাকরীতে ছিলেন, এমন কোন ব্যক্তি উক্ত চাকরী ছেড়ে যাওয়ার ৫বছর পর বিইআরসি’র সদস্য পদের যোগ্য ও উপযুক্ত হবেন, এমন বিধান করার দাবী করা হয়।
ইউটিলিটিরপরিচালনা বোর্ড থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেয়ার দাবী করা হয়।
কারিগরী বিশেষজ্ঞ খন্দকার সারেক শুফি বলেন, গ্যাস সংকটের দোহাই দিয়ে আনা হচ্ছে এলএনজি। এক্ষেত্রে চুক্তিতে রয়েছে নানা অসঙ্গতি। ২০ এখন ৯ ডলারের গ্যাস কেনা হচ্ছে ২২ ডলারে। এগুলো করা হচ্ছে মালিকদের স্বার্থে ভোক্তাদের স্বার্থে নয়। আমরা জ্বালানী সংকটের দিকে এগিয়ে চলছি। যা আগামী ৩ বছরের মধ্যে আরো প্রকট হবে।
ড. তুরিন আফরোজ বলেন, বার্ক বর্তমানে পেপার টাইগারে পরিনত হয়েছে। তার এখন আন রেগুলেটেড এবং মিস রেগুলেটেড হচ্ছে এটা দুঃখ জনক। ফ্রি মার্কেট ইকোনমি হিসেবে দাম নির্ধারণ করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। এ বিষয়টিও এখন আমাদের ভাবতে হবে।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমরা যাদের ক্ষমতায় বা উচ্চ আসনে বসিয়েছি তারা ঠিকভাবে আমাদের জন্য কাজ করছে না।তারা ব্যবসায়ী, আমলাদের জন্য কাজ করছে। তার পরেও তারা দেশের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। এখন সময় হয়েছে এবিষয়টি তাদের বুঝানোর। কুইক রেন্টালকে বসিয়ে বসিয়ে টাকা দেয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, বিদ্যুত ও জ্বালানির মূল্য সহনীয় পর্যায়ের থাকুক সেটিই ভোক্তারা চায়। কোনো বিশেষ আইন এক দু বছরের জন্য চলতে পারে কিন্তু এটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য চলতে পারে না বলেও মত দেন তিনি।
মোবাশ্বের হোসেন বলেন, দেশে আইনের তোয়াক্কা না করেই কাজ চলছে। টেকনিক্যালি আদায় করা হচ্ছে বেশি কিছু। দেশে নতুন আইন লাগবে কি না, এবং আইনের বাস্তবায়র জরুরী। প্রয়োজন হলে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যেতে হবে।
পরিবেশ আইনবীদ সৈয়দা রেজওয়ান হাসান বলেন, জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো আইন কার্যকর করা সম্ভব নয়। সরকারের সকল কাজের দায়ই নিতে হয় দেশের মানুষকে। জনগণের অংশগ্রহণ ও গণতন্ত্র ছাড়া কোনো আইন বেশিদিন চলতে দেয়া উচিৎ নয়।
দায় মুক্তি দিয়ে কোনো আইন করা হলেও তা কোনো দিন দায় মুক্ত হবে না। এ বিষয়ে অনতি বিলম্বে লিগ্যাল স্টেপ নিয়ে সুরাহা করতে হবে।
নাগরিক সভায় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক এম এজাজ হোসেন, অধ্যাপক মো. তানজিম উদ্দীন খান, বদরুল ইমাম, মো. শামসুল আলম, কাজী আবদুল হান্নান, মোশাররফ হোসেন, রইস সরকার, জামিল চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ, ড. আবু তাহের প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।