ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, এখন আমাদের গ্যাস সংকট চলছে, এটা আমাদের তৈরি না। আজকে যদি এই আকাশচুম্বি দাম না হতো, তাহলে দেশে গ্যাস বিদ্যুতের কোনো অভাব হতো না।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আওতাধীন এলাকায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরার সাহায্যে মনিটরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের খেসারত আমরা দিচ্ছি। এখন আমরা সীমিত আকারে গ্যাস, বিদ্যুতের ব্যবহারে জোর দিচ্ছি আমদানি কমাতে। আগে যেটা পাঁচ টাকায় কিনেছি, সেটা এখন ত্রিশ টাকা। দাম ছয় গুণ বেড়ে গেছে। কয়লার দাম দুই-তিন গুণ বেড়েছে। এগুলোর দাম আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। এখানে আমাদের হাত নেই। এই দাম যত দিন বেশি থাকবে ততদিন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ থাকবে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেছেন, অবৈধ সংযোগের ক্ষেত্রে আমরা শুধু জরিমানাটাই করেছি। এখন থেকে জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও দেওয়া হবে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘যদি আমাদের পেট্রোবাংলা ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে কেউ সম্পৃক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে দুটি জিনিস হবে। একটি হলো বিভাগীয় মামলা, আরেকটি ফৌজদারি মামলা। একজন সাধারণ মানুষের যা সাজা হবে তার সেটার ডাবল হবে। তার চাকরির ক্ষেত্রে যেমন সমস্যা হবে তার সাজাও হবে। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা যাবে’।
‘অপরাধ প্রথমবার কেউ যদি করে তাহলে তিন মাস কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। ম্যাজিস্ট্রেট যেভাবে চায় সাজা দিতে পারবেন। কেউ যদি দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করে তাহলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা।
বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এ সাজার মেয়াদ আরও বেশি। তখন প্রথমবারে ছয় মাস কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দ্বিতীয়বার করতে তা দ্বিগুণ। শিল্প ও সিএনজির ক্ষেত্রে প্রথমবার অপরাধ করলে এক বছর কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা। চাইলে দুটোই দেওয়া যেতে পারে। দ্বিতীয়বার করলে তা দ্বিগুণ হবে। গৃহস্থালির সংযোগ কেউ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে তিন মাস কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা’।
‘এখানে অভিযোগ আসছে সিএনজি স্টেশন থেকে সিলিন্ডারে ভরে গ্যাস নিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সাজার বিধান রয়েছে। গ্যাস নেটওয়ার্ক থেকে অবৈধভাবে সংযোগ দিলে এক বছর কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এক উদ্দেশ্যে গ্যাস নিয়ে আরেক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলেও সাজার বিধান রয়েছে। পরের বার করলে সেটি দ্বিগুণ।
সঞ্চালন বা বিদ্যুতের লাইন অর্থাৎ মিটারের ক্ষতিসাধন করা হলে সে বিধানও আইনে রয়েছে। এগুলো চুরি করে যদি নিজ দখলে রাখে তাহলে এক বছরের সাজা ও এক লাখ টাকা জরিমানা। কেউ এ ক্ষেত্রে সহায়তা করলে একই রকমের সাজা দেওয়ার বিধান রয়েছে। একজন ব্যক্তি যদি পাওনা পরিশোধ না করে এবং তার অবৈধ সংযোগে যদি বেশি ব্যবহার করে তাহলে মামলা করে তার থেকে পাওনা টাকাটিও আদায় করার সুযোগ রয়েছে’।
এ সময় জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, তিতাসের এমডি হারুনুর রশিদ, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।