ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
অপেক্ষাকৃত কম গ্যাস সঞ্চালন করে বেশি মুনাফা আয়ের অভিযোগ উঠেছে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি (জিটিসিএল)-এর বিরুদ্ধে। দেশে গ্যাসের চাহিদা থাকলেও জোগান দিন দিন কমছে। কোনও কোনও লাইন অচিরেই অলস হয়ে পড়বে, এমন শঙ্কাও করা হচ্ছে। তবু মুনাফা বেড়ে চলছে জিটিসিএল-এর। বিষয়টিকে অস্বচ্ছ বলে অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সূত্র বলছে, দেশে একমাত্র গ্যাস সঞ্চালন কোম্পানি জিটিসিএল। জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে খনি ও আমদানি করা গ্যাস বিতরণ সংস্থার লাইনে পৌঁছে দেওয়াই তাদের কাজ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিটিসিএল-এর বার্ষিক রাজস্ব চাহিদা বিবেচনা করে প্রতি ঘনমিটারের সঞ্চালন চার্জ নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর সঞ্চালন চার্জ আর বাড়েনি। এখন প্রতি ঘনমিটারে চার্জ ০.৪২৫৩ টাকা। ২০১৮ সালে ছিল ০.২৬৫৪ টাকা।
জিটিসিএল সম্প্রতি তাদের সঞ্চালন মাশুল বা চার্জ বৃদ্ধির যে আবেদন করেছে তাতে তারা চলতি অর্থবছরের জন্য ০.৭৩০৭ টাকা ও পরের অর্থ বছরের জন্য ০.৮৬৫৮ টাকা চার্জ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে।
হিসাব বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে কারিগরি কমিটি জিটিসিএল-এর নিট মুনাফা ধরা হয়েছে ৪৫৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই সময় কোম্পানির অবচয় বিবেচনা করা হয়েছে ৪৪২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
২০১৫ সালের তুলনায় ২০২২ সালে জিটিসিএল-এর সঞ্চালন ও অবচয় ব্যয়, এবং নিট মুনাফা বৃদ্ধি পায় যথাক্রমে ৫১৯.৮১% ও ২১৪.৪৩% এবং ৬৯১.৬০%।
কিন্তু গ্যাস সঞ্চালনের হিসাব বলছে, ২০১৫ সালে গ্যাস সঞ্চালন হবে ২৬ হাজার ৫২২.৪৯ ঘনমিটার এবং ২০২২ সালে হবে ২৬ হাজার ৩৯৩.০৪ ঘনমিটার।
অর্থাৎ ২০২২ সালে জিটিসিএল কর্তৃক ২০১৫ সালের তুলনায় ০.৪৯% গ্যাস কম সঞ্চালন হবে।
কম গ্যাস সঞ্চালন করেও অতিরিক্ত মুনাফা করার সমালোচনা করে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কম গ্যাস সঞ্চালন করেও তাদের মুনাফা বাড়ছে। বিষয়টি অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঞ্চালন খাত উন্নয়নে অস্বচ্ছতারই প্রমাণ।
এ বিষয়ে জিটিসিএল-এর এক কর্মকর্তা জানান, ‘এখন আমাদের বেশ কিছু বড় প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পগুলোতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হচ্ছে। বিনিয়োগ করা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে দেশই সংকটে পড়বে। সঙ্গত কারণে আমরা সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর আবেদন করেছি। কোনও কিছুই অসঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিইআরসিকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
খবর: বাংলাট্রিবিউন