ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে-এ তথ্য সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভূ-তত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমাম।
এ সময়ে তিনি বলেন, দেশে এখনো প্রচুর পরিমাণে গ্যাস রয়েছে। দেশে গ্যাস নেই, এ তথ্য ভূল । কারণ আমাদের সমুদ্র সীমানায় এখনো গ্যাস অনুসন্ধান করা হয়নি। যে অঞ্চলগুলোতে এখনো গ্যাস অনুসন্ধান করা হয় নাই, সেই অঞ্চল গুলোতে অনুসন্ধান (সার্ভে) চালানো প্রয়োজন।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে আলোচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘এনার্জি ট্রানজিশন: গ্লোবাল কনটেক্স অ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি)।
বক্তব্যে বদরুল ইমাম বলেন, (দেশের গ্যাসের সম্ভাব্যতার বিষয়ে) অন্তত তিনটি আন্তর্জাতিক গবেষণা বলছে, আমাদের দেশে এখনও ৩৪ টিসিএফ এর মতো গ্যাস রয়েছে। এই গ্যাসের জন্য স্থলভাগ এবং জলভাগে অনুসন্ধান জোরদার করা প্রয়োজন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন,‘গ্যাসের দামবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। কারণ, এখন আমাদের কাছে ডিপ সীতে (গভীর সমুদ্রে) এক্সপ্লোরেশনের জন্য অফার আসছে। আগে কোনো পার্টিই পাওয়া যায়নি। বদরুল ইমাম সাহেব একটা জাতীয় দৈনিকের মতামতে বলেছেন যে, কেন আমরা ডিপ সীতে এক্সপ্লোরেশনে গেলাম না তখন। কোনো পার্টিই তো ছিল না তখন। আমরা টেন্ডার দিয়েছি, কেউ আসেনি।… কারণ সে সময়ে গ্যাসের দাম অনেক কম ছিল।’
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কেউ বলছেন জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার দরকার, আবার কেউ বলছেন স্বল্প মেয়াদি। তবে যেটা করলে কম দামে দিতে পারবো সেটাই করা হবে। কারণ ভোক্তাতো সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি চায়। এর জন্যে যদি কেউ বেসরকারি ভাবে এলএনজি আমদানি করতে চায়, তাহলে তার জন্য সুযোগ রয়েছে।
এছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, এলএনজি আমদানিতে এখনও নীতিমালায় কোনও বাধা নেই। কোনও বেসরকারি উদ্যোক্তা যদি এলএনজি আমদানি করে, আমরা তাকে স্বাগত জানাবো।
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা চাইলেই রাতারাতি জ্বালানির ধরন পরিবর্তন করতে পারবো না। চাইলেই এক সঙ্গে অনেক সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের জমির স্বল্পতা রয়েছে। তিনি বলেন, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি বড় সমাধান হচ্ছে রুফ টপ সোলার বা ছাদে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরকার এটিকে উৎসাহিত করছে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম জানান, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি আমদানিতে বছরে অন্তত ২০ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে গ্যাস আমদানিতে ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, কয়লা আমদানিতে ৫ বিলিয়ন ডলার, বিদ্যুৎ আমদানি এবং তরল জ্বালানি আমদানিতে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বেসরকারি খাতে জ্বালানি আমদানির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আজ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এবং জ্বালানি সচিব সরকারের উদ্যোগের বিষয়টি পরিষ্কার করলেন।