ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বিদ্যুতের গ্রিড বিপর্যয় কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয় উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, এ রকম টেকনিক্যাল ফল্ট হতেই পারে। বিশেষ করে সাব-স্টেশনগুলো ক্ষেত্রে, যে সাব-স্টেশনগুলো বহু পুরোনো এবং সেগুলোর কার্যক্রম এখনো চলছে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রাথমিক প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। আমরা জানি, এই সময়ের মধ্যে গ্রাহকদের বিরাট অসুবিধা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতি মুহূর্তে জানান দেওয়ার জন্য। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় এবং কীভাবে আরও দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা চলছে।
নসরুল হামিদ বলেন, অনেক সময় অনেক ঘটনা ম্যান মেইড থাকে, অনেক সময় থাকে না। বিষয়গুলো ভেরি টেকনিক্যাল। যে প্রবলেমগুলো থাকে আমরা সেগুলো সলভ করার চেষ্টা করি। এ পর্যন্ত তো গ্রিড আনস্টেবল হয়নি। প্রতিবেদনে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে, পরবর্তীতে আরও জানা যাবে। এই ঘটনার পরে দ্রুততার সঙ্গে, ১ ঘণ্টার মধ্যে স্টেবল করা শুরু হয়েছে। ঢাকায় দেরি করে দিয়েছি কারণ, ঢাকায় লোড অনেক বেশি থাকে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, আমরা কত দ্রুত রিস্টোর করেছি। বিশ্বের অনেক দেশের রেকর্ড আছে, ৩-৪ দিন লেগে গেছে। আমরা সেদিকে যাচ্ছি না। এক ঘণ্টা পরেই রিস্টোর করা শুরু হয়ে গেছে। অবশ্যই টেকনিক্যাল ফল্ট আছে। পিন টু পিন ধরতে গেলে সময় লাগবে। এ জন্য দুটি কমিটি করে দিয়েছি। একটিতে বিদ্যুৎ বিভাগের ভেতরের লোক, আরেকটিতে বাইরের লোক।
উল্লেখ্য, জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৪ মিনিট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং কুমিল্লার আংশিক এলাকা বিদ্যুৎহীন ছিলো দীর্ঘ সময়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারন মানুষ।
এর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মানিকগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়। এসসয় ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জের আংশিক এলাকায় সরবরাহ চালু হয়।
রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মিরপুর, মগবাজার, মাদারটেক, রামপুরা, গুলশান, উলন, বসুন্ধরা, ধানমন্ডি, আফতাবনগর, বনশ্রী, ধানমন্ডি (আংশিক), আদাবর, শেরে বাংলা নগর, তেজগাঁও, মিন্টুরোড, মতিঝিল, শ্যামপুর, পাগলা, পোস্তগোলাসহ বেশকিছু এলাকায়।
রাজধানীর বাকি এলাকাগুলোতে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এর পরেই দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর সকাল ১১.৩০ এর দিকে ন্যাশনাল গ্রিড ফেইল করে সারা দেশে বিদ্যুৎ চলে যায়, যা সম্পূর্ণ চালু করতে প্রায় ১২ ঘন্টা লেগে গিয়েছিল। এটাই ছিল দেশের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।