বেসরকারি ভাবে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকছে পেট্রোবাংলা, ভোক্তা স্বার্থের পরিপন্থী বলছে ক্যাব

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে সামিট গ্রুপসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে কাজও করছে পেট্রোবাংলার স্ট্যান্ডিং কমিটি। তবে বেসরকারি ভাবে এলএনজি সরবরাহের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে।

এদিকে, এ প্রক্রিয়ায় গ্যাস সরবরাহ করলে ভোক্তা স্বার্থ লুন্ঠিত হবে বলে মনে করছেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম। 

তবে যেটা করলে ভালো হয়, সেটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান।

পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া যাচ্ছে ২৩৫ কোটি ঘনফুট। ঘাটতি মেটাতে ২০১৮ সাল থেকে গ্যাস আমদানি শুরু করে সরকার। দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি আমদানি করে বাংলাদেশ। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার ও ওমান থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং স্পট থেকে দৈনিক ১৫০-২০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করতো পেট্রোবাংলা।

কাতার-ওমান থেকে এলএনজি আমদানি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও ইউক্রেন যুদ্ধের ইসুতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্পট মার্কেট থেকে আমদানি বন্ধ রেখেছে জ্বালানি বিভাগ। ফলে জাতীয় গ্রিডে ১০ শতাংশের মতো গ্যাসের ঘাটতি চলছে। ঘাটতি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের পদক্ষেপ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চিহ্নিত ৪৬টি কূপের মাধ্যমে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান নাজমুল আহসান।

সামিট ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহের জন্য জুলাইতে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে পেট্রোবাংলায়। প্রস্তাবে চার ধাপে বিভিন্ন দর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবের প্রথম ধাপে ২০২৩ সালের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজির দর ধরা হয়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দামের ৩৫.১৪ শতাংশের সঙ্গে দশমিক চার মার্কিন ডলার। তবে তাদের দাম বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রায় সমান বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন এন্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারের স্টান্ডিং কমিটি কাজ করছে। তবে স্পর্ট মার্কেটে এলএনজির দাম বেশি থাকার কারণে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। কারণ এখন সিদ্ধান্ত নিলে এলএনজির বর্তমান দর অনুযায়ী চুক্তি করতে হবে। তাই এলএনজির দাম কমার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।’

তথ্যমতে, গত ১৬ এপ্রিল প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির স্পট মূল্য ছিল ২৫ ডলার, এরপর মে মাসের একই সময়ে পণ্যটির দাম পাঁচ ডলার কমে ২০ ডলারে নেমে যায়। এরপর পুনরায় জুনে পণ্যটির দাম ১৪ ডলার বেড়ে ৩৪ ডলার উঠে যায়। জুলাইয়ে ৩৯ ও অগাস্টে তা রেকর্ড সর্বোচ্চ ৭০ ডলারে উঠে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর পণ্যটির দাম ৫৩ ডলারের কিছু বেশি থাকলেও আকস্মিক ভাবে তা কমে ৪২ ডলারে নেমে যায়। বর্তমানে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ৪৫ ডলারে ওঠানামা করছে।

কাতার ও ওমানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সরকার যে এলএনজি কিনছে, তাতে প্রতি ব্যারেল ক্রুড অয়েলের দাম ৮০ ডলার থাকলে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়ে ১০ মার্কিন ডলার। ক্রুড অয়েল ১২০ ডলারে উঠলে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি ১৫ ডলার পড়ে। সর্বশেষ গত জুনে পেট্রোবাংলা স্পট মার্কেট থেকে যে এলএনজি কিনেছিল, তার দাম পড়েছিল ২৫ ডলার। এরপর থেকেই এলএনজি দর চড়া দামের কারণে আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং দাম না কমা পর্যন্ত আমদানি বন্ধ রাখারও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গণমাধ্যম ও পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, সামিট গ্রুপ ২০২৪ সালের জন্য ব্রেন্ট ক্রুডের ২৬.৮৬ শতাংশের সঙ্গে দশমিক চার মার্কিন ডলার যুক্ত করে প্রতি ইউনিট এলএনজির দরপ্রস্তাব করেছে। ২০২৫ সালের জন্য ব্রেন্ট ক্রুডের ২০.৫১ শতাংশের সঙ্গে দশমিক চার মার্কিন ডলার যুক্ত করে প্রতি ইউনিট এলএনজি বিক্রি করতে চায়। ২০২৬ থেকে ২০৩৭ সাল পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুডের ১৩.১৩ শতাংশের সঙ্গে দশমিক চার মার্কিন ডলার যুক্ত করে এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব করেছে সামিট। 

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘পেট্রোবাংলার একজন পরিচালককে প্রধান করে স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা কাজ করছে। রিপোর্ট পেশ করার পর বোঝা যাবে।’

বেসরকারি ভাবে আমদানির পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে রাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে আমরা সেটাই করবো। এখানে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে আমদানি করলে যদি সাশ্রয়ী হয় তাহলে সেটা করা হবে। আবার যদি সাশ্রয় না হয়, তাহলে করবো না।’

তবে বড় বিষয় হলো- যে সময় বাজার টালমাটাল অবস্থায় থাকে, তখন যে কারো জন্যই কনফ্লিক্ট সিদ্ধান্তে যাওয়া মুশকিল। এটি ফিউচারের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। সুতরাং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার যে বিষয়টি রয়েছে, সেটি ২০২৫ সালের আগে কেউ দিতে পারবে না, যোগ করেন নাজমুল আহসান।

এ সিদ্ধান্ত নিতে কতো সময় লাগতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কমিটিই বলতে পারবে- কতো সময় লাগতে পারে। এখানে টার্মস এন্ড কন্ডিশনে যখন দু’পক্ষ বসবে, তখনই বোঝা যাবে কতো সময় লাগবে। সরকার এবং সামিট গ্রুপ কাজ করছে। তাদেরও কিছু কন্ডিশন আছে, আবার সরকারের পক্ষ থেকেও কিছু বিষয় রয়েছে। ইতিমধ্যে দু’পক্ষই কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে, আরও কিছু বিষয় বাকি রয়েছে। সবকিছু শেষ হলেই কমিটি রিপোর্ট দেবে।’

একটি কোম্পানি না কি একাধিক কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়া হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যে ২০/২১টা আবেদন পড়েছে। সবগুলো একসঙ্গেই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সবকিছু হিসাব করেই একটা সিদ্ধান্তে যাওয়া হবে।’

তবে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহ করলে দাম বেশি পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক কামরুজ্জামান খান ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই কাজ করে। যেমন ধরেন, সরকারি বিল্ডিংগুলো তো কোন বেসরকারি ঠিকাদারকে দিয়েই বানানো হয়। এখানে সরকার তো নিজের হাতে কাজ করে না, এটাও এমন (এলএনজি আমদানি)। তবে কমিটি রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত কিছুই বোঝা যাবে না, কি হবে।’

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব বিভাগের (অবসরপ্রাপ্ত) অধ্যাপক বদরুল ইমাম ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাসের সন্ধান না বাড়ানোর কারণে যেহেতু দেশে গ্যাস কমে গেছে। তাই চাহিদা মেটানোর জন্য এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। তবে স্পর্ট মার্কেটে এখন এলএনজির চড়া দাম, এখন এতে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। সুতরাং এই পরিকল্পনাটা জাস্টিফাইড না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখন দেখা দরকার- সরকারের ব্রডলাইনটা (পরিকল্পনা) কি? আগামী পাঁচ বছরে তারা কি পরিমাণ এলএনজি সরবরাহ করতে চায়। আমরা জানি- এলএনজি আমদানি করবে। তবে আমদানিকৃত গ্যাসের ওপর কতো শতাংশ এবং নিজস্ব গ্যাসের ওপর কতো শতাংশ সরকার নির্ভর করবে, সেটাও পরিস্কার হওয়া দরকার।’

এদিকে, বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করলে প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দাম হবে বলে মনে করছেন পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘বেসরকারি কোম্পানি যদি এলএনজি আমদানি করে সরকারের কাছে সরবরাহ করে, তাহলে তারা অবশ্যই একটা মুনাফা নেবে। আর এটা স্বাভাবিক ভাবেই গ্রাহকের ওপর গিয়ে পড়বে। এখানে সরকার সরাসরি এলএনজি আমদানি করলে বাড়তি সেই টাকাটা সাশ্রয়ী হবে। সুতরাং এই প্রক্রিয়ায় সুফল আসবে না।’

তবে বেসরকারি ভাবে আমদানির অনুমোদন দিলেও একাধিক কোম্পানিকে এই সুযোগ দেওয়ার পক্ষেও মত রয়েছে। 

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘একাধিক কোম্পানির এলএনজি আমদানির সুযোগ দিলে বাজার প্রতিযোগীতাপূর্ণ হবে। গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দামও তুলনামূলক কম থাকবে। এতে বাজারে কোন কোম্পানির একচ্ছত্র আধিপত্য থাকবে না।’

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি বুঝি না, এখানে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে দেশ ও জনগণের জন্য ভালো হবে আমরা সেই বিষয়েই সিদ্ধান্ত নেব।’

তথ্য বলছে, বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে সরকার এলএনজি আমদানি করলে সামিট গ্রুপের কাজ পাওয়ার বিষয়ে অগ্রাধিকার থাকবে। এখানে রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক ভাবে কোম্পানিটি এগিয়ে রয়েছে। কারণ মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে যে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে (এফএসআরইউ)। এ দুটি পরিচালনা করছে দেশীয় কোম্পানি সামিট ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি যৌথ ভাবে।’

দেশে বেসরকারি খাতে বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ। সামিটের নিজের সাতটি এবং শেয়ার রয়েছে চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সব মিলিয়ে বর্তমানে সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট। টার্মিনাল পরিচালনার পাশাপাশি এলএনজি সরবরাহ করতেও চায় সামিট গ্রুপ। এখন সামিট এলএনজি সরবরাহের অনুমতি পেলে দেশে একচ্ছত্র বাণিজ্য সৃষ্টি হবে তাদের।

এ বিষয়ে সামিট কর্পোরেশন লিমিটেডের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসেনা হাসান ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহের জন্য (জ্বালানি বিভাগে) প্রস্তাব করেছি। এখন অনুমোদন দেওয়া বা না দেওয়ার বিষয়টি সরকারের হাতে। এখানে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। সরকার যেটা ভালো মনে করবে, সেটাই করবে।’

তবে ভোক্তা স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাবের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রগুলোর সঠিক তত্ত্বাবধান ও সময়মতো অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে গেলে এলএনজি আমদানির প্রয়োজন হতো না। এখানে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বার্থে গ্যাসের ঘাটতি দেখিয়ে (বেসরকারি ভাবে) এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহ করা হলে ভোক্তার কতটা উপকার হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এতে ভোক্তা উপকৃত হবে না, ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। তাই এই সিদ্ধান্ত ভোক্তা বা রাষ্ট্রের জন্য সাংঘর্ষিক হবে। কারণ এটা ভোক্তা স্বার্থের পরিপন্থী।

এদিকে, বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহের অনুমোদনের জন্য কোন (রাজনৈতিক) প্রভাব পড়তে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা অসম্ভব কিছু না।’

সম্প্রতি মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় সিঙ্গাপুরের ৪২তম ধনী হিসেবে নাম রয়েছে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খানের। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভাই।