ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: শিল্পখাত স্বাভাবিক রাখার জন্য ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এপ্রিল থেকে গ্যাসের নতুন বর্ধিত দামের প্রয়োগ শুরু করা হতে পারে। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি হঠাৎ করেই ভর্তুকি কমানো এবং রাজস্ব ঘাটতি কাটানোর লক্ষ্যে গ্যাসের দাম ১৭৯ ভাগ বাড়িয়ে দেয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকার একটি হোটেলে টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এরই মধ্যে মার্চ পর্যন্ত গ্যাসের বর্ধিত দাম পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে আমরা এটি আরও এক মাস অর্থাৎ এপ্রিল মাস পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছি। একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পর এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।’
গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে নিরাপত্তা আমানতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা শিল্পপতিদের জন্য বাধ্যতামূলক সিকিউরিটি ডিপোজিট নিয়েও আলোচনা করেছি। মালিকদের তাদের গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে কোনো অতিরিক্ত অর্থ জমা করতে হবে না।’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড আমাদের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা অর্থ দাবি করবে না। যদি তারা সেই টাকা নেয়, তাহলে প্রতিটি মিল মালিককে অতিরিক্ত ৮-১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে।
মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের একটি বৈঠকে, আমরা একটি ইঙ্গিত পেয়েছি যে বর্ধিত দাম মার্চ পর্যন্ত পেছানো হবে।’ তবে ব্যবসায়ীরা লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাসের (এলএনজি) নতুন কার্গো না আসা পর্যন্ত দাম না বাড়ানোর যুক্তি দেখিয়েছিলেন।
জানুয়ারির ১৮ তারিখে হঠাৎ করেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহূত গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ৫.০২ থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা (১৭৯ ভাগ বৃদ্ধি) করা হয়েছে। ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টের জন্য গ্যাসের দাম ১৬ টাকা (৮৮ ভাগ বৃদ্ধি) থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। ভারী শিল্পের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ১১.৯৮ টাকা থেকে ৩০ টাকা (১৫০ ভাগ বৃদ্ধি) হয়েছে। মাঝারি শিল্পের জন্যও নতুন দাম ১১.৭৮ টাকা থেকে থেকে ৩০ টাকা (১৫৫ ভাগ বৃদ্ধি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ২৬.৬৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০.৫০ টাকা (১৪ ভাগ বৃদ্ধি) করা হয়েছে। তবে আবাসিক খাতসহ সার ও চা উৎপাদনের কাজে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি। ১৮ জানুয়ারিতে প্রকাশিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নতুন দামগুলো কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
নয়াশতাব্দি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বৈঠকের বিষয়ে ওয়াকিবহাল সূত্র থেকে জানা গেছে, ফেডারেশন অব চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিনও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্যাসের দাম বৃদ্ধির তারিখ এপ্রিল পর্যন্ত পেছানোর অনুরোধ করেছেন এবং মাঝখানের সময়টুকুতে এলএনজি আমদানির জন্য নতুন এলসি খোলার সুযোগের অনুরোধ জানিয়েছেন।’