নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ক্যাবের।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করেন বিইআরসি। মাসের শুরুতে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করে দেন সংগঠনটি।
সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল ৪৮ টাকা বাড়িয়ে প্রতিটি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৪৩৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৩৯১ টাকা।
আর আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও এলপিজির দাম বেড়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে ১২ কেজি এলপিজির দাম ১,১৭৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,২৪০ টাকা করা হয়। মার্চে প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১২৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৯০ টাকা ৫৬ পয়সা করা হয়েছিল।
সরকারের নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৪৩৯ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫ শ’ থেকে ১৬৫০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর মালিবাগ, মিরপুর, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে চওড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি।
মালিবাগ এলাকার এলপিজি ব্যবসায়ী রহিমের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি সিলিন্ডার এলপিজি বিক্রি করছেন ১৬০০ টাকা। যা বিক্রি হওয়ার কথা ১৪শ’ উনচল্লিশ টাকা দরে। বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে ১৫৫০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এলপিজি।
কারওয়ান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ ৮০ টাকা থেকে ১৫শ’ বিশ টাকায়।
এলপিজির সঠিল মূল্যে বিক্রি করতে অনাস্থা ব্যাবসায়ীদের। প্রতি ১২ কেজি সিলেন্ডারে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
বেশি দামে বিক্রির কারণ জানতে চাইলে এলপিজি ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের যে দামে বিক্রি করলে কিছু টাকা মুনাফা হবে, সে দামেই বিক্রি করছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ীর মতে, ‘ব্যবসা করতে বসে কি লোকসান দিবো নাকি? যে দামে বিক্রি করতেছি, এটাই সঠিক দাম। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি। আমরা লাভ না করলে সংসার চলবে কিভাবে?’
‘কি করবো বলেন? যদি তারা (বিক্রেতা) বলেন এদামে কিনলে নিতে পারেন। এর থেকে কম বিক্রি করা সম্ভব না’ কথাগুলো বলছিলেন, শহীদ নামে এলপিজি ক্রেতা। তার চায়ের দোকানে প্রতিদিন একটি করে প্রয়োজন হয় সিলেন্ডার। তিনি বলেন, দুয়েক দিন পর পর দাম বাড়িয়ে দেয়। আমাদের কিছু করার থাকে না।
গতকালের এই সিলেন্ডার নিয়ে আসছি ১৫০০ টাকা দিয়ে বলেন শহীদ।
শফিকুল নামে অন্য এক ক্রেতা বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে কখনো কিনতে পারি না। সবসময়ই পঞ্চাশ থেকে একশো টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, আমরা এগুলো নিয়েই কাজ করছি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিবো। নির্দিষ্ট দোকান এবং তথ্য উপস্থাপন করলে সাথে সাথে ক্যাবের পক্ষ থেকে ঐ দোকানিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়মিত অভিযোগ ও অভিযানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান সরকারের প্রতি।