ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুতের দাম খুচরা পর্যায়ে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ ও পাইকারি পর্যায়ে ৫ দশমিক ০৭৪ শতাংশ বাড়ছে। নতুন দাম ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবারই গেজেট জারি হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতে ভর্তুকিতে ডলারের তারতম্যটাই মূল বিষয়। গ্যাসের দামও ঊর্ধ্বমুখী। এবার বিদ্যুতের ভর্তুকি গিয়ে দাঁড়াবে ৪৩ হাজার কোটি টাকায়। সে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দাম সমন্বয়ে যেতে হবে। জ্বালানির দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আমরা ধীরে ধীরে কয়েক বছর ধরে মূল্য সমন্বয়ে যাবো।
নিচের দিকে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম ৩৪ পয়সা বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওপরের দিকে ৭০ পয়সা বাড়বে। অর্থাৎ নিচের দিকে ৫ শতাংশ বাড়বে। ওপরের দিকে সাড়ে ৮ শতাংশের মতো। মাসের শেষে হয়তো ১০০ টাকায় ৫ থেকে ৮ টাকা বাড়তে পারে।
নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ প্রায় ১২ টাকা, ডলারের দামের তারতম্যের কারণে। ৭ থেকে ৮ টাকা ছিল এটা। আমরা গড়ে প্রতি ইউনিট বিক্রি করছি ৭ টাকায়। সমন্বয়টা উপরের দিকে বেশি করছি, নিচের দিকে কম করছি।
বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের কারণে প্রভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের কথায় মনে হচ্ছে অত বেশি পরিবর্তন ঘটবে না। খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।
তিনি আরও বলেন, ডায়নামিক প্রাইসে তেলের দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পহেলা মার্চ থেকে সেটি কার্যকর করা শুরু হবে। আর বিদ্যুতের দাম যেটা বেড়েছে, সেটা পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জ্বালানির দাম সমন্বয় করেছি বিদ্যুতে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যে দামে গ্যাস নিতো, সেখানে আমরা ৭০ পয়সার মতো সমন্বয় করেছি। আর তেলের দামও ডায়নামিক প্রাইসে নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়লা, তেল ও গ্যাসসহ জ্বালানি আমরা যে দামে কিনতাম, সেখানে একটা ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। গত বছরে মারাত্মক ভাবে এ পরিবর্তন এসেছে। যে কারণে ডলারের সঙ্গে জ্বালানির দাম সমন্বয় করার চিন্তা ভাবনা করছিলাম। জ্বালানির ব্যাপারে একটা ডায়নামিক প্রাইসের দিকে যাচ্ছি। যেটা পহেলা মার্চ থেকে শুরু হবে। কাল-পরশুর মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘ডায়নামিক প্রাইস বলতে, বিশ্বে যদি জ্বালানির দাম বাড়ে, তাহলে আমাদের দেশেও সেটার সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়বে, বিশ্বে যদি কমে, আমাদের দেশেও কমবে। আর এটা প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে করা হবে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ প্রতিদিন এটা করে। যেমন, কলকাতার কথা যদি বলি, সেখানে এক লিটার ডিজেলের দাম ১৩৩ টাকা। আমাদের দেশে ডিজেলের দাম ১০৯ টাকা।
তিনি বলেন, এভাবে গ্যাসের দামও ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হচ্ছে আমাদের। গ্যাস আমদানি সহনীয় পর্যায়ে। আমরা যদি গ্যাসের সঙ্গে যদি মিক্সড করি, তাহলে ২৪ টাকার ওপরে পড়ে যায়। এ গ্যাস সারকে দিচ্ছি ১৬ টাকা রেটে, বিদ্যুতকে দিচ্ছি ১৪ টাকা রেটে। যে কারণে গ্যাসের দাম ১৪ টাকা ৭০ পয়সা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে না, সমন্বয় করা হচ্ছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে, সে কারণে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে। আমরা তো খরচ উঠাতে চাচ্ছি, খুবই সামান্য পরিমাণে দাম বাড়বে। লাইফ লাইন গ্রাহকের (৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারী) মাসের বিল ২০ টাকার মতো বাড়তে পারে। এখন গ্রাহকরা যদি একটু সাশ্রয়ী হন, তাহলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা।
-এসএম