ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের প্রথম বেজের প্রথম চালানের জ্বালানি নিউক্লিয়ার ফ্রেশ ফুয়েল অবশেষে রূপপুরের ভেতরে সফল ভাবে এসে পৌঁছেছে।
শুক্রবার দুপুরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তার ঢাকা থেকে সড়কপথে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঈশ্বরদীর সীমানা মুলাডুলিতে এসে পৌঁছায়। এরপর দাশুডিয়া মোড় থেকে সরাসরি পাকশীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে দুপুর ১টা ১৫ থেকে ১টা ২০ মিনিটের দিকে প্রবেশ করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালক ড. শৌকত আকবর ও ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাস এ তথ্য জানান।
প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, রূপপুর প্রকল্প এলাকায় এই জ্বালানি গ্রহণের মাধ্যমে এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উন্নীত হবে। আগামী ০৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এই জ্বালানি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে গ্রাজুয়েশন লাভ করবে।
এদিকে, আজ জ্বালানি নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে সড়কপথে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সাময়িক যানবাহন বন্ধ রাখা হয়। প্রকল্পে সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য শুক্রবার ছুটি ছিল। বাইরে থেকে শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতে যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা থেকে ২০ মিনিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পের গেট দিয়ে ইউরেনিয়াম বাহিত বিশেষ গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। ইউরেনিয়াম প্রবেশের দৃশ্য দেখার জন্য এলাকার উৎসব মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা থাকায় প্রকল্প এলাকার রাস্তায় তাদের আসতে দেয়নি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশনের (রোসাটম) জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করেছে। এই জ্বালানি বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রকল্প সাইটে আনার সময় সড়কপথে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়। সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিলেন। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জ্বালানি পরিবহনের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এটি আমদানি, পরিবহন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার বিষয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। সেই গাইডলাইন বা নির্দেশনা পুরোপুরি অনুসরণ করে সব ধরনের ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আগামী ০৫ অক্টোবর রূপপুরে জ্বালানি গ্রাজুয়েশন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।