ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: নিরাপদ, পরিস্কার ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক পেটেরিস উসতাবস্-এর নেতৃত্বে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধির সঙ্গে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ, পরিস্কার ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে সরকার কাজ করছে। ২০৪১ সাল নাগাদ জ্বালানি মিক্সে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পরিষ্কার জ্বালানির অবদান থাকবে। বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে অর্থায়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি সহায়তা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ১০০টি প্রকল্পের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আরও প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া চলমান। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৯০ ভাগই বেসরকারি খাত থেকে হচ্ছে।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘বায়ু বিদ্যুৎ ও অফসোর বায়ু বিদ্যুৎ নিয়েও সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করতে আগ্রহী। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ বিভাগ অফসোর বায়ুর সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়ে কাজ করছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ অফসোর বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এ নিয়ে কাজ করতে পারে। নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সঞ্চালন ও সাব-স্টেশন স্থাপনেও আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চূড়ান্ত অনুমোদন না করায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ চলে গেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এ বিনিয়োগ আসা উচিৎ। বাংলাদেশে রূপটপ সোলার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পরিচালক পেটেরিস উসতাবস্ বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে ই-ইউ আগ্রহী। বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে টেকনিক্যাল এ্যাসিসট্যান্স এবং ইনভেষ্টমেন্ট গ্রান্ড-এর আওতায় ৭০ কোটি ৬০ লক্ষ ইউরো রয়েছে। বাংলাদেশ, ভূটান, ইন্ডিয়া, নেপাল এবং শ্রীলংকায় সমন্বিত নবায়ণযোগ্য জ্বালানি, গ্রীণ হাউজ গ্যাস নিৎসরণ হ্রাস, জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ‘Energy Connectivity in South Asia’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে ইইউ কাজ করছে। তাছাড়া ‘Partnership for Green Energy Transition in Bangladesh’ প্রকল্প স্রেডার মাধ্যমে NDC টার্গেট পূরণে সহায়তা করছে।’
এ সময় Regional Electricity Market, EU Market, গ্রীডের উন্নয়ন, আঞ্চলিক সহযোগিতা, নেপাল থেকে বাংলাদেশে ডেডিকেটেড সঞ্চালন লাইন, সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশে গ্রীণ এনার্জি পরিবর্তনের অগ্রাধিকার, সহযোগিতা এবং বিনিয়োগের সুযোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক জ্বালানি সংযোগের বিষয়ও আলোচনায় স্থান পায়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ এর রাষ্ট্রদূত চার্লস্ হুইটলি, হেড অব সেক্টর ফর সাউথ এশিয়া অড্রেই মাইলট ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
-এসএম