ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে পুনর্গঠন করতে চাই। বিদ্যুৎখাতে অনিয়মের কাঠামো ভেঙে দিতে চাই।
শনিবার দুপুরে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এখাতে ঘটা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। মনে রাখতে হবে এটা একটি নতুন বাংলাদেশ। এখানে সবার সমান সুযোগ। সংকট যেমন আছে, সমাধানও তেমন আছে।
তিনি বলেন, এতদিন আমাদের দেশে একটি উন্নয়নের কাহিনী পড়া হচ্ছিল যে, বাংলাদেশে আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বাড়ছে এবং আমরা নিম্নআয়ের দেশ থকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছি। এখন দেখা যাচ্ছে এটা একটা ভ্রান্তি। খুলনায় প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পাওয়ার প্ল্যান্ট হয়েছে, যা জাতীয় জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে। জিডিপি বাড়লেও গ্যাসভিত্তিক এ পাওয়ার প্ল্যান্ট সহসা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা তো অনেক আগে থেকেই জানতাম বাংলাদেশে গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাবে, এখান থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আট হাজার কোটি টাকা খরচ হলো কিন্তু মানুষ এটা থেকে কোনো উপকার পাচ্ছে না। এটাই হলো উন্নয়নের ভ্রান্তি।
তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবনের কী উন্নতি হয়েছে তা দিয়ে উন্নয়নকে পরিমাপ করতে হবে। খুলনার এ পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছে কেবল ভোলাতে গ্যাস আছে, যা অপর্যাপ্ত। এখানে প্রয়োজন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস। কিন্তু ভোলাতে অতিরিক্ত আছে কেবল ১০০ এমএমসিএফ গ্যাস। তিন বছর সময় নিয়ে নতুন পাইপলাইন করে এ গ্যাস খুলনায় আনলেও সেটা পর্যাপ্ত হবে না। তবুও এ পাওয়ার প্ল্যান্টকে কীভাবে আংশিক ভাবে সচল করা যায় সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. রেজাউল করিম, খুলনার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইউসুপ আলীসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জনপ্রতিনিধি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তা, স্থানীয় সুশীল সমাজ, ছাত্র সমন্বয়ক ও প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় উপদেষ্টা অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ ও অভিযোগসমূহ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ মতবিনিময় সভায় স্বাগত জানান খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ।