ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।
কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে তীব্র দাবদাহের কারণে হ্রদের পানির স্তর অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। ফলে হ্রদের পানির ওপর নির্ভরশীল কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয়। এবারের শুষ্ক মৌসুমে পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র একটি ইউনিট দিয়ে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছিল। পানির অভাবে বাকি চারটি ইউনিট বন্ধ ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে হ্রদের পানির স্তর কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়াতে বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।
রোববার সকালে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুল্লাহ বলেন, এই বছরের বর্ষার শুরুতে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আমাদের পাঁচটি ইউনিটই সচল আছে, তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা কম। পাঁচটি ইউনিটে মোট ১৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, সবগুলো ইউনিট চালু থাকলে পানি ভাগ হয়ে যায়। এক বা দুটি ইউনিট চালু থাকলে পানির যে স্তর থাকে সবগুলো ইউনিট চালু থাকলে পানি ভাগ হয়ে পানির স্তর কমে যায় তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা কম হয়।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানি থাকার কথা ৯০.৬০ এমএসএল (মীনস সী লেভেল)। কিন্তু বর্তমানে হ্রদে পানি আছে ৮২.৮৩ এমএসএল। যা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে ১ নং ইউনিট থেকে ৩৩ মেগাওয়াট, ২ নং ইউনিট থেকে ৩২ মেগাওয়াট, ৩ নং ইউনিট থেকে ২৪ মেগাওয়াট, ৪ এবং ৫ নং ইউনিট থেকে ২২ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। বৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত একটি ইউনিট সচল ছিল যা থেকে ৩০-৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছিল।