প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আসছেন কেজিডিসিএল’র ১ লাখ গ্রাহক

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: এক লাখ আবাসিক গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। গত সপ্তাহ থেকে গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভের কাজ করছে কেজিডিসিএল’র নিয়োগ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের ‘টয়োকিকি’। প্রথম সপ্তাহেই দুই হাজারের বেশি গ্রাহকের সার্ভের কাজ শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গ্যাসের প্রি-পেইড মিটারের জন্য ইতোমধ্যে ৮৮ হাজার গ্রাহক আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ৩৩ হাজার গ্রাহক নকশা জমা দিয়েছেন। যারা নকশা জমা দিয়েছেন তাদের ঠিকানা ধরে এখন সার্ভের কাজ চলছে। সার্ভেসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হলেই মিটার স্থাপন শুরু হবে। এ জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে জাপান থেকে মিটার আনতে বেসিক ব্যাংকে এলসি খোলা হয়েছে।

জানা গেছে, কেজিডিসিএল’র আবাসিক গ্রাহক সংখ্যা এখন প্রায় ছয় লাখ। এর মধ্যে ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রথম দফায় ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।

‘ইন্সটলেশন অফ প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল পার্ট-৩’ নামের নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে নগরী এবং জেলার এক লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কেজিডিসিএল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই কেজিডিসিএল’র নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, বাকলিয়া, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং জেলার হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার এক লাখ কেজিডিসিএল গ্রাহক প্রিপেইড মিটার পাবেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এক লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনতে নানা জটিলতা কাটিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘টয়োকিকির’ সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী এখন মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে ‘টয়োকিকির’ স্থানীয় প্রতিনিধি অনোডা ইনকর্পোরেশন। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চায় তারা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। যারা নকশা জমা দিয়েছেন, সেখানে সার্ভে করা হচ্ছে। যারা আবেদন করেছেন, তাদের নকশা জমা দিতে আমরা চিঠি দিচ্ছি। যারা এখনো আবেদন করেননি, তাদের আবেদন করতে উৎসাহিত করছি। সব কাজ গুছিয়ে ডিসেম্বরেই মিটার স্থাপন করতে চাই আমরা।

তিনি জানান, পোস্ট পেইড গ্রাহকরা গড়ে ৭৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। কিন্তু প্রিপেইড মিটারে এটি ৪০-৪৮ ঘনমিটার। এ জন্য সব গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনবো আমরা। সবাই প্রি-পেইড মিটারের আওতায় এলে গ্যাসের অপচয় কমবে। গ্রাহকদের ভোগান্তিও কমে আসবে। যতটুকুু গ্যাসের ব্যবহার হবে, ঠিক ততটুকুর টাকাই তারা দেবেন।

প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কারণে গ্যাস সম্পর্কিত দুর্ঘটনা কমে আসছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও জানান, যে এলাকায় প্রিপেইড মিটার স্থাপন হয় সেই এলাকার পুরো লাইন চেক করি আমরা। ২০-৩০ বছর আগে স্থাপন করা এসব লাইনে ত্রুটি থাকলে মেরামত করা হয়। প্রি-পেইড মিটার হওয়ায় গ্যাস লিকেজ হলে গ্রাহকরাও বুঝতে পারেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।

-এসএম