ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: বিশ্বের প্রায় ১১০টির মতো দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিবেদন অনুযায়ী সেখানে শিশু ও কম বয়সীদের হাসপাতালের ভর্তির হার বেড়েছে। এ বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। একেবারে হেলাফেলা করার সুযোগ নেই।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে এক ভার্চুয়াল বুলেটিনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন।
ডা. রোবেদ আমিন বলেন, এ পর্যন্ত ওমিক্রন বিষয়ে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে এবং গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওমিক্রমনের বিষয়ে কতগুলো বিষয় জানা গেছে। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন সংক্রমণের ক্ষমতা ২ থেকে ৩ গুণ বেশি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যেসব ঝুঁকির কারণে কোভিড-১৯ এ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, দেখা গেছে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা ৩০ ভাগ কম। এটা আমাদের জন্য একটা ভালো খবর। ডেলটা বা আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা ২০ ভাগ কম থাকবে।
আরেকটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের পুনরায় সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই ভ্যারিয়েন্ট অন্য রোগের সৃষ্টি করে কি না, তা এখনো প্রমাণিত হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু অথবা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা থাকবে কি না, সে সংক্রান্ত বেশি তথ্য নেই। যেটুকু জানা গেছে, দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিনের কিছু কিছু কার্যকারিতা থাকে কিন্তু শতভাগ কার্যকারিতা থাকে না। তবে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে কেউ যদি বুস্টার ডোজ নিয়ে থাকে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। ৭৫ ভাগের বেশি প্রটেকশান থাকবে এটা প্রমাণিত।
ওমিক্রন রোধে করণীয় বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই মুখপাত্র বলেন, আগে যেসব প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছিল সেগুলোই থাকবে। কাপড়ের মাস্কের চেয়ে মেডিকেল গ্রেডের মাস্ক ব্যবহার করলে ওমিক্রন থেকে বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে, খোলামেলা আবহাওয়ায় থাকলে এবং বারবার হাত ধুতে পারলে আমরা অনেক বেশি ট্রান্সমিশন রোধ করতে পারবো।
ডা. রোবেদ আমিন বলেন, আগের ভ্যারিয়েন্টগুলো থেকে ওমিক্রনে আক্রান্ত অনেক বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপ এবং আমেরিকায় যেসব কেইস পাওয়া গেছে তাতে হাসপাতালে ভর্তি, সংকটাপন্ন হয়ে যাওয়া, আইসিইউতে থাকা এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি।
যদি কেউ আগে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং পরে ভ্যাকসিন নেন তাহলে তাদের সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকবে। তবে যেহেতু এটি দ্রুত ছাড়ায় তাই আমরা যদি অসংখ্য রোগী পেয়ে যাই, সে ক্ষেত্রে অন্য রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন লাখ ছাড়াচ্ছে সংক্রমণের হার। সে জন্য তারা বুস্টার ডোজের মাধ্যমে সংক্রমণের হার কমানো যায় কি না, সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।