দেশে বর্তমানে শনাক্ত হওয়া ২০ শতাংশ রোগীই করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত। বাকি ৮০ শতাংশ রোগী করোনার ডেল্টা বা অন্যান্য ধরনে সংক্রমিত। তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত কেউ নেই, শতভাগ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। কোভিড-১৯-এর জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জিনোম সিকোয়েন্সের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত নমুনার ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ও ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। পরবর্তী মাসে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতক হারে বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপাচার্য বলেন, গবেষণায় ৯ মাসের শিশু থেকে ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা- সব ধরনের রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এতে মোট ৭৬৯ রোগীর ন্যাজোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য আরও জানান, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ওমিক্রনের জেনেটিক কোডে ডেল্টার চেয়ে বেশি ডিলিশন মিউটেশন পাওয়া গেছে।
জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা আঞ্জুমান বানু। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনার ৯৬টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এসব নমুনা হাসপাতালে ভর্তি রোগী, হাসপাতালের আউটডোরে আসা রোগী ও বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত ৯৬টি নমুনার মধ্যে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা নয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের শতভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের রোগী।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষক দলের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।