ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আক্রান্তের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের পুনরাবৃত্তি হতে পারে, যা পরিস্থিতি জটিল করতে পারে। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১০ হাজার ২৩২ জনের (হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর তথ্য)। এরপর গত এক সপ্তাহেই (২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ২ হাজার ৬৪৩ জন শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ঢাকায় শনাক্ত হয় ১ হাজার ৯২২ জন। আর ঢাকার বাইরে শনাক্ত হয় ৭২১ জন। এই এক সপ্তাহে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
এর আগের সপ্তাহে (৮ সেপ্টেম্বর-১৫ সেপ্টেম্বর) ২ হাজার ২৮১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ঢাকায় শনাক্ত হয় এক হাজার ৬৪৭ জনের। আর ঢাকার বাইরে শনাক্ত হয় ৬৩৪ জনের। ওই সপ্তাহে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৯ জন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৩টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো হলো- ১, ১১, ১৪, ১৬, ১৯, ২০, ২১, ২৪, ২৮, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৯ নং ওয়ার্ড। জরিপে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেরও (ডিএসসিসি) ১৪টি ওয়ার্ড অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে উঠে এসেছে। এলাকাগুলো হলো- ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ৩৪, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২, ৪৮, ৫১ নং ওয়ার্ড।
জরিপ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিএনসিসির ৪০ ওয়ার্ডের ৪৮টি সাইট এবং ডিএসসিসির ৫৮টি ওয়ার্ডে ৬২টি সাইটসহ মোট ১১০টি সাইটে ৩ হাজার ১৫০টি বাড়িতে সার্ভে পরিচালনা করা হয়েছে। ২১টি টিমের মাধ্যমে ১০ দিনব্যাপী এই স্টাডি পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিটি টিম অন্তত ১৫টি সাইট সার্ভে করে।
জরিপে পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে, ১৫৯টি বাড়িতে ডেঙ্গুর ফল পজিটিভ এসেছে। মোট পজিটিভ আসা বাড়িগুলোর মধ্যে ৬৩টি বাড়ি ডিএনসিসিতে এবং ৯৬টি বাড়ি ডিএসসিসিতে অবস্থিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ তখনই বাড়ে, যখন মশার সংখ্যা বাড়ে। অথবা মশাকে মেরে ফেলা না যায়।
নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি আমাদের জন্য উদ্বেগের। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত বছরের তুলনায় কিছুটা সফলও হয়েছি। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মিডিয়াগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।