ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। প্রচন্ড গরমে পিপাসার্ত মানুষ যেখানেই পানি পাচ্ছেন, সেখানেই পিপাসা নিবারণের চেষ্টা করেছেন। ফলে বিশুদ্ধ পানির অভাবে বাড়ছে ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৭৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সেখানে ভর্তি হয়েছেন। গত ০৭ জুলাই ৪১৬ জন, ০৮ জুলাই ৩৬৯ জন, ০৯ জুলাই ৩৫৫ জন, ১০ জুলাই ২৯০ জন, ১১ জুলাই ৩৭১ জন, ১২ জুলাই ৩৯১ জন ও ১৩ জুলাই ৩৯৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআরবি’তে ভর্তি হন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে আসা রোগীদের অধিকাংশই শিশু, শ্রমিক ও দিনমজুর। যাদের সবাই ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।
এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, প্রতিবার গরম এলেই ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি ভুক্তভোগী হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শহরে ট্যাপের পানি সেপটিক ট্যাংক বা সুয়ারেজ লাইনের সংস্পর্শে দূষিত পানি পান করার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে, আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর রাজশাহীসহ সাত জেলায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। ফলে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ অবস্থা আরও ২-৩ থাকবে।
আইসিডিডিআরবি’র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. সাজ্জাদুল হক বলেন, ‘যেসব রোগী আসছে তারা একেবারে সিভিয়ার কন্ডিশনে আসছে না। সিভিয়ার পেশেন্ট খুব কম বলা যায়। এই মুহূর্তে আমাদের এখানে যারা আসছেন, তাদের অধিকাংশই পানি শূন্যতা নিয়ে আসছেন। তবে ওই পরিমাণ সিভিয়ারিটি নেই।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে আগতদের মধ্যে যাদের প্রয়োজন, তাদেরকে আমরা মুখে খাওয়ার স্যালাইন দিচ্ছি। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটাই বেস্ট ট্রিটমেন্ট। ওটা দিলেই রোগীর যে পানিশূন্যতা রয়েছে, সেটা কেটে যায়। এমনকি একজন রোগীকে যদি বাসাতেই স্যালাইনটা বানিয়ে খাওয়ানো যায়, তাহলে তাকে নিয়ে আর হাসপাতালেই আসা লাগে না।’
এ বিষয়ে করণীয় প্রসঙ্গে ডা. সাজ্জাদুল হক বলেন, ‘ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বিষয়টা অভিভাবকরা গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। তবে এর চিকিৎসা খুবই সহজ। যতবার পাতলা পায়খানা হবে, ততবার একটি করে খাবার স্যালাইন ৫০০ মিলিলিটার সুপেয় পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে এমনিতেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসারও প্রয়োজন হবে না।’