ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দরপতনের সঙ্গে এবার শেয়ারবাজারে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে এক মাসের বেশি সময় বা ২৮ কার্যদিবস পর চারশো কোটি টাকার কম লেনদেন হলো।
লেনদেন খরা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি দরপতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ডিএসইতে যে কয়কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় তিনগুণ প্রতিষ্ঠানের। এরপরও প্রধান মূল্যসূচক ও ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত বাছাই করা সূচক বেড়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। ফলে এ বাজারটিতে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিট বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। এতে লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ বেড়ে যায়।
এরপর কয়েক দফায় সূচকের উত্থান-পতন চলে। সূচকের এ উত্থান-পতনের মধ্যে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিতে থাকে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যাওয়ায় লেনদেন শেষ হওয়ার আধাঘণ্টা আগে ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট কমে যায়। তবে শেষ ২০ মিনিটের লেনদেনে বড় মূলধনের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় প্রধান মূল্যসূচক।
প্রধান মূল্যসূচক পতনের হাত থেকে রক্ষা পেলেও বড় হয় দাম কমার তালিকা। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৪১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২২টির। আর ১৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচকের মিশ্র প্রবণতার মধ্যে ডিএসইতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৩৪০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় কমেনি, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকসের ১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেনেক্স ইনফোসিস, সোনালী পেপার, মুন্নু সিরামিকস, জেমিনি সি ফুড, অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট ও ওরিয়ন ইনফিউশন।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৫টির এবং ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।