রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগীদের জন্য সকালের নাশতায় পচা পাউরুটি ও জেলি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে রোগীর স্বজনরা সেই পাউরুটি ও জেলি নিয়ে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে যান। জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রোগীদের। শাহমখদুম ব্রেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান এসব পচা পাউরুটি জেলি ও কলা সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্র। প্রতিষ্ঠানের হয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন কলাবাগান এলাকার হিকু মিয়া, শাওন ও সাইদসহ আরও কয়েকজন সকালের নাশতা সরবরাহ করেন।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের একাধিক রোগী ও স্বজনের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা পচা পাউরুটি ও কলা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার স্বার্থে ও ঝামেলা এড়াতে তারা কেউ নাম প্রকাশে রাজি হননি। রোগী ও স্বজনরা জানান, নিয়মমাফিক মঙ্গলবার সকালে রোগীদের জন্য বরাদ্দ করা নাশতা দেওয়ার পর প্যাকেট খুলেই পচা পাউরুটি পান তারা। এসব পাউরুটি থেকে গন্ধ বেরোচ্ছিল।
এর সঙ্গে যে কলা দেওয়া হয়েছিল তা ছিল বেশ ছোট ও সরবরাহ করা জেলি থেকেও পচা গন্ধ পান তারা। ফলে খেতে গিয়ে কেউ আর খেতে পারেননি। সেগুলো কেউ কেউ ডাস্টবিনে আবার কেউবা বাইরে ছুড়ে ফেলে দেন। ঘটনা জানার পর পরিচালক ঠিকাদারকে তার দপ্তরে ডেকে সতর্ক করেন। একইসঙ্গে খাবারের মান পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইকেও জানিয়েছেন।
কয়েকজন রোগীর স্বজন সরবরাহ করা পচা পাউরুটি, জেলি ও কলা হাতে করে নিয়ে ঢুকে পড়েন পরিচালকের কক্ষে। পরিচালককে দেখিয়ে তারা সরবরাহকারী ঠিকাদার ও ডায়েটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পরিচালক অবশ্য নিজেই এসব পাউরুটি ও জেলি পরীক্ষা করে দেখে সেগুলো দ্রুত ফেলে দেওয়ার নিদেশ দেন। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসব ফেলে দেওয়া রুটি, জেলি ও কলা হাসপাতাল কম্পাউন্ডের বিভিন্ন জায়গা থেকে জড়ো করে ফেলে দেওয়ার জন্য অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, পাউরুটি ও জেলি পচা নয়। সকালে তৈরির পরই গরম অবস্থায় এগুলো প্যাকেট করা হয়েছে। আর প্যাকেট ছিদ্র না-করায় গ্যাস বের হয়নি। এ জন্য দ্রুত গন্ধ হয়ে গেছে। তবে কেন এমন হয়েছে-বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
পচা পাউরুটি ও জেলি ছাড়াও ছোট কলা সরবরাহের অভিযোগ প্রসঙ্গে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, মঙ্গলবার সকালের নাশতা নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে অভিযোগ করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। যোগদানের পরপরই এমন অভিযোগ পেয়েছিলাম। আমি বিএসটিআইকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছি খাবারগুলোর মান দেখার জন্য। আর অভিযুক্ত খাবার সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।