ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি অপরাধ। আমাদের আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ করতে পারি না। আইনটা এখন আরও মজবুত করার উদ্যোগ নিয়েছি।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত ‘বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল’ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (প্রতিরোধ)। ঠিক মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রেজিস্ট্যান্স হয় কীভাবে, জনগণকে তা জানাতে হবে। যারা এ সেবার সঙ্গে জড়িত, সাধারণ মানুষ, যারা আমাদের থেকে সেবা নিচ্ছেন, তাদের সবাইকে অ্যান্টিবায়োটিক বিষয়ে জানাতে হবে।
‘মানুষ এখন যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক নিচ্ছে। আমাদের প্রেসক্রিপশন বেশি হয়। প্রেসক্রিপশনটা জুডিশিয়ালি করা উচিত। গ্রাম এলাকায় চিকিৎসক ছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ছাড়া কেউই অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারবে না।’
রোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা অ্যান্টিবায়োটিক খান, তারা অনেক সময় কোর্স পূরণ করেন না। এটাও ক্ষতিকর। আবার যেসব অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে তাদের অধিকাংশের প্রয়োজন নেই। গ্রামাঞ্চলে এটা সবচেয়ে বেশি। সেখানে গ্রামীণ চিকিৎসক, যাদের স্বীকৃতি নেই তারা দিচ্ছেন। ঔষধ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু তাতেও হচ্ছে না। এটাতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।
‘অ্যান্টিবায়োটিকের মারাত্মক ব্যবহার হচ্ছে ফার্মগুলোতে। গরু, মুরগি, মাছ ও মাংসে অ্যান্টিবায়োটিকে সয়লাব হয়ে গেছে। পোল্ট্রি খামারগুলোতে ব্যাপক আকারে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী যতটুকু ব্যবহার করা উচিত, তার বাইরে যাতে না হয় সেটা দেখতে হবে। বর্জ্যের কারণে মাছ ও মাংস খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে জটিল ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করছে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহম্মদ ইউসুফ বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার অনেক বেশি। এটা রোধে শক্ত আইনের বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে কোয়ালিটি ঠিক না রাখায় ২৭ কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আইন প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী সংসদে সেটা পাস হবে।
‘দেশে ওষুধ বেচা-কেনায় জড়িতদের ৬৬ ভাগই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। এজন্য লাল চিহ্নযুক্ত আলাদা প্যাকেজিং করা হচ্ছে। যাতে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ সহজেই শনাক্ত করতে পারে। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতনতায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাপত্র ও ফুল ডোজ ছাড়া ওষুধ বিক্রি বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে। তবে, শুধু আইন করে এটা রোধ করা সম্ভব নয়। মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।