যেসব দেশ তার নাগরিকদের করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কথা ভাবছে, তাদের অন্তত আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বুস্টার ডোজের কার্যক্রম স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকাদানের ব্যবধান কমিয়ে আনতেই বুস্টার ডোজের প্রয়োগ বন্ধ রাখার তাগিদ দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাবরিয়েসুস । ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলছেন, বুস্টার ডোজ স্থগিত রাখলে এই সময়ের মধ্যে যেসব দেশ টিকা পায়নি, তার প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। ডব্লিউএইচওর তথ্যমতে, উন্নত দেশগুলোতে টিকাদানের হারে অনেক বেশি হলেও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে মাত্র দেড়জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। টিকা সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দেশগুলো টিকা দিতে পারছে না।
টিকা সরবরাহের পরিস্থিতি বিপরীতমুখী হওয়া উচিত- এমনটাই বলছেন ডব্লিউএইচও প্রধান। টিকার বেশির ভাগ এখন নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে সরবরাহ করা উচিত বলেও মনে করছেন তিনি। তেদ্রোস বলেন, করোনার ডেল্টা ধরন থেকে নিজের দেশের জনগণকে বাঁচাতে সব সরকারের উদ্বিগ্ন হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু এই কারণে তারা টিকার বৈশ্বিক সরবরাহের অধিকাংশই ব্যবহার করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
টিকাদানের ক্ষেত্রে ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য বুস্টার ডোজ বন্ধের এই আহ্বান ডব্লিউএইচওর গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি আগামী মাসের মধ্যে প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু টিকাদানের বর্তমান যে অবস্থা তাতে ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
গরিব দেশগুলোতে টিকা সরবরাহ করতে ধনী দেশগুলোর প্রতি তেদরোসের আহ্বান এটাই প্রথম নয়। গত মে মাসে তিনি শিশু ও কিশোর–কিশোরীদের টিকা না দিয়ে, সেগুলো গরিব দেশগুলোতে সরবারাহ করতে ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় বুস্টার ডোজের প্রয়োজন রয়েছে কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মতভেদ রয়েছে। তারপরও বেশ কয়েকটি দেশ অতিরিক্ত এই ডোজ প্রয়োগ ইতোমধ্যে শুরু করেছে কিংবা অচিরেই শুরু করতে যাচ্ছে।