ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দীর্ঘ সময় বসে থাকলে ভুঁড়ি বাড়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পেটের মেদ বেড়ে গেলে শারীরিক সৌন্দর্য তো বাধাগ্রস্ত হয়, রোগও শরীরে বাসা বাঁধে। অতিরিক্ত মেদ শরীরের জন্য মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে। আর এ কারণেই বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে মিলিয়ে সবারই ওজন ধরে রাখা উচিত। তবে অনিয়মিত জীবন-যাপনের কারণে ছোট-বড় সবাই কমবেশি মুটিয়ে যাচ্ছেন। করোনা আবহে স্থূলতার সমস্যা আরও বেড়েছে বলে, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতিরিক্ত মেদ-ভুঁড়ি বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নারী ও পুরুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে মেদ বাড়তে থাকে। পুরুষদের ভুঁড়ি বাড়তে থাকে। অন্যদিকে নারীদের নিতম্ব ও পেটে বেশি চর্বি জমে। এ কারণে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ভিসারাল ফ্যাট বা পেটের খারাপ চর্বি শরীরের জন্য অনেক বিপজ্জনক হতে পারে। জেনে নিন এই চর্বি কোন কোন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়-
ডায়াবেটিস
পাকস্থলী বা অন্ত্রের চারপাশে যে চর্বি থাকে, তা শুধু আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে নিরাপদ রাখতে কাজ করে। তবে ওই চর্বির পাশে যদি অতিরিক্ত চর্বি থাকে তখন তা হয়ে ওঠে বিভিন্ন রোগের কারণ। টাইপ ২ ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে ফ্যাটি লিভার ও হার্টজনিত রোগও গ্রাস করতে পারে।
ইনসুলিন প্রতিরোধ
শরীরের চর্বি কোষগুলো এমন কোষ তৈরি করে, যার মাধ্যমে প্রদাহ হ্রাস পায়। এটি সুস্থ কোষের বৃদ্ধি বাড়াতেও কাজ করে। অন্যদিকে যখন শরীরে চর্বি বেশি থাকে, তখন ফ্যাট কোষগুলো তাদের কাজ সঠিকভাবে করতে পারে না। ফলে ইনসুলিন রেজিন্টেন্সের অবস্থা তৈরি হতে থাকে। এ অবস্থায় আমাদের পেশি, চর্বি ও লিভার ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া করে না। যার কারণে রক্ত থেকে গ্লুকোজ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। একে বলা হয় ইনসুলিন রেজিস্টেন্স। এমনটি ঘটলে অগ্ন্যাশয় আরও ইনসুলিন তৈরি করে, যাতে গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারে।
এডিপোকাইনস ও প্রদাহ
শরীরের অন্ত্রে চর্বি জমলে অ্যাডিপোকাইনের নিঃসরণ ঘটে। এটি একটি রাসায়নিক, যা প্রদাহ বাড়ায় ও রক্তে ফ্যাটি অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়। তবে পাকস্থলীর ভালো চর্বি কোষগুলো ফ্যাটি অ্যাসিডের সঞ্চালন হতে দেয় না। ফলে এই ফ্যাটি অ্যাসিড জমতে শুরু করে। যা শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই বিপজ্জনক নয় বরং এটি শরীরে বিভিন্ন রোগ ও সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে প্রতিদিন। অবশ্যই শরীরচর্চার মাধ্যমে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে হবে। তাতে শরীরের গঠনও সুন্দর হবে, সঙ্গে ওজনও কমবে। শুধু ব্যায়াম করলেই কিন্তু হবে না। এর পাশাপাশি খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। মোটকথা স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অবলম্বন করতে হবে।