ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: শর্করা, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যা্গনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাসসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপদানে ভরপুর গাজরকে বলা হয় ‘সুপার ফুড’। শীতকালীন সাধারণ রোগগুলো দূরে রাখতে দারুণ কার্যকর একটি সবজি এটি। শীতকালে বাজারে গাজরের অভাব নেই। বিশেষজ্ঞরা গাজর খেতে উৎসাহ দিয়েছেন। শীতকালে সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই ঠান্ডার দিনগুলোতে সুস্থ থাকার প্রয়াসে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।
কী ভাবে শরীরের যত্ন নেয় গাজর?
- গাজর ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, অর্থাৎ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়াতে পারে। দ্য ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ওয়েক্সনার মেডিক্যাল সেন্টারের ডায়েটিশিয়ান ডা. এমিলি রাইস বলেন, ‘ইমিউন সিস্টেমের জন্য ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ইমিউন সিস্টেম যত শক্তিশালী হয়, সংক্রমণের বিরুদ্ধে তত ভালোভাবে লড়তে পারে।
- গাজর দৃষ্টির সুরক্ষায় সাহায্য করে। এতে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন রয়েছে, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি হারানো, রাতকানা ও ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- গাজর ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। যদি আপনি চান যে আপনার শরীর বেশি করে বিটা ক্যারোটিনকে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত করুক, তাহলে ফ্যাট সহকারে গাজর খান। ভিটামিন এ চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বলে এটা শরীরে শোষিত হতে ফ্যাটের প্রয়োজন আছে।
- গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই এটি খেলে রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডা. এমিলি জানান, ‘সেই খাবারকে লো গ্লাইসেমিক ফুড বলা হয়, যা রক্ত শর্করা দ্রুত বাড়ায় না। যে খাবার রক্ত শর্করা দ্রুত বাড়ায়, তাকে হাই গ্লাইসেমিক ফুড বিবেচনা করা হয়। সাধারণত লো গ্লাইসেমিক ফুডের জিআই ৪৯ বা আরো কম।’ কেবল প্রিডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিস রোগী নয়, রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা সুস্থ মানুষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
- গাজর আন্ত্রিক উপকারসাধন করে থাকে। ডা. এমিলি বলেন, ‘নিয়মিত মলত্যাগ করতে তথা কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে ফাইবার সাহায্য করে।’ ফাইবার ওজন কমাতেও সহায়ক।গাজর খেলে দীর্ঘসময় মনে হয় যে, পেট ভরা আছে। এর ফলে ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ গাজর ফ্রি র্যাডিকেলসের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। ফলে হৃদরোগ, রক্তনালীর রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। গাজর প্রদাহও কমাতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের সঙ্গে হৃদরোগ, স্মৃতিভ্রংশতা ও বাতরোগের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
- বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গাজরের মতো অশ্বেতসার সবজি খাওয়া উচিত। গাজরে প্রচুর সলিউবল ফাইবার রয়েছে, যা প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে। আপনার উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে এটা কমানোর চেষ্টা করা উচিত। কারণ উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হতে পারে।