মশক নিয়ন্ত্রণে যা করছে ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দিনকে দিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলো। রাজধানী জুড়ে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে এডিস মশার জন্ম ও ‍প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নানামূখী কার্যক্রম গ্রহণ করলেও কাজে আসছে না। ভুক্তভোগী হচ্ছেন নগরবাসী।

এডিস মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে চিরুনি অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান রয়েছে। নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে প্রতিদিনই এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে দুই সিটি কর্পোরেশন।

এক সপ্তাহে কোনো ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে সে ওয়ার্ডকে ‘লাল চিহ্নিত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পরিচালনা করা হবে দিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ সিটি।

ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৫টি ওয়ার্ডকে অধিক ডেঙ্গু ঝুঁকি এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২, ৩, ৫, ৬, ১০, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৫, ৩৭, ৩৮ নম্বরসহ মোট ২৭টি ওয়ার্ড। এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৬, ১৮, ১৯, ২২, ২৩, ২৬, ৩৩, ৩৪, ৩৬, ৪১, ৪৪, ৪৬, ৪৮, ৫০, ৫১, ৫৪, ৫৫, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডসহ মোট ২৮টি ওয়ার্ড।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন
নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে এবং এডিস মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করছে দুই সিটি কর্পোরেশন।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন
সপ্তাহে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী পেলে ওয়ার্ড ‘লাল চিহ্নিত’ ঘোষণা করা হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবশেষ বিশেষ এই উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। আগামী শনিবার (২৬ অগাস্ট) থেকে দক্ষিণের ৫, ২২, ৫৩ ও ৬০ নম্বর ওয়ার্ডে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাঠে নামবে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আগামী শনিবার আমরা আরেকটি বিশেষ অভিযান নিচ্ছি (পরিচালনা শুরু করব)। যেটা ওয়ার্ডভিত্তিক। যে ওয়ার্ডে এক সপ্তাহে ১০ জনের অধিক রোগী শানাক্ত করা হবে, সে ওয়ার্ডগুলোকে আমরা বিশেষ লাল চিহ্নিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করছি। সে ওয়ার্ডের এলাকাবাসী, সকল হোল্ডিং-স্থাপনার মালিকদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন নিজ নিজ বাসা-বাড়ি, স্থাপনা, আঙ্গিনা নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীর দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রার্থনা করছি। সে দিন কেউ কাজে যাবেন না। এটাই সবচেয়ে বড় কাজ হবে। আমরা যদি নিজেদের জীবন সুরক্ষিত রাখতে চাই, তাহলে এটাই হবে আমাদের গুরু দায়িত্ব। আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মী, মশক কর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবে। আমরা দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এডিস মশার উৎসস্থলগুলোকে ধ্বংস করব। যার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘৫, ২২, ৫৩ ও ৬০ এই চারটি ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে আমরা ১০ জনেরও বেশি রোগী পেয়েছি। এই চারটি ওয়ার্ডে আগামী শনিবার অভিযান পরিচালনা করব। এরপরে যদি আমরা দেখি যে, অন্য কোনো ওয়ার্ডে বা একাধিক ওয়ার্ডে এক সপ্তাহে ১০ জনের বেশি রোগী আসছে, তাহলে আমরা সে ওয়ার্ডগুলোতেও (পরের শনিবারে বিশেষ এই অভিযান পরিচালনা) করব। আমরা মনে করি, এভাবে এডিস মশাকে পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।’

সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করতে কাজ করছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। পাশাপাশি যেসব জায়গায় এডিস মশার প্রজননস্থল পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। নিয়মিত এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া গত ০৪ জুলাই থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ২৫টি ওয়ার্ডে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে বিশেষ চিরুনি অভিযান চলমান আছে। কর্মসূচিতে প্রতিদিন সকালে ১৩ জন এবং বিকেলে ১৩ জন মশক কর্মী ব্যাপক ভাবে লার্ভিসাইডিং ও অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া কাউন্সিলরদের জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।

এর আগে যা করেছিল দক্ষিণ সিটি
২০২১ সালে মশার লার্ভা খেয়ে ফেলার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ১০টি জলাশয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যাঙ ছাড়া হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল এ ব্যাঙ বংশবিস্তার করবে এবং জলাশয় থেকে লার্ভা খেয়ে মশার বংশবিস্তার রোধ করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এতে খুব একটা কাজ হয়নি।

সবশেষ গত বছর মশার ওষুধ ছিটানোর সঙ্গে সঙ্গে জিঙ্গেল (সচেতনমূলক গান) বাজিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসসিসি। এ অঞ্চলের প্রতি এলাকায় দু’জন করে মশক নিধন কর্মী ওষুধ ছিটিয়ে যান। তাদের পাশাপাশি আরেকজন হ্যান্ড মাইকে জিঙ্গেল বাজান। সেখানে মূলত সচেতনতামূলক গান বাজতে থাকে। মশক নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর করণীয় এবং তাদের সচেতনতার বার্তা প্রচার করা হয়। এতে কী ফল এসেছে তাও প্রশ্নবিদ্ধ।

মশা নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চলতি অর্থবছরে বাজেট কত?
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণে মোট ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ বরাদ্দ রেখেছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এর মধ্যে মশা নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশকে ব্যয় করবে ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন পরিবহনে ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতিতে ব্যয় ধরা হয়েছে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন
সম্প্রতি এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে আমদানিকৃত বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস (বিটিআই) প্রয়োগ করে উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তবে বিটিআই আমদানি এবং পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন এবং সমালোচনা হওয়ায় এটি প্রয়োগ বন্ধ রয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে গত ০৮ জুলাই থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

এছাড়া, এডিস মশা নিধনে ড্রোনের সাহায্যে বাসা-বাড়ির ছাদে পানি জমে আছে কি না, মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ আছে কি না- বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। পৃথক পৃথক ড্রোনের মাধ্যমে ডিএনসিসি’র আওতাধীন এলাকার বাসা-বাড়ির ছাদ সার্ভে করা হচ্ছে। একটি ডাটা বেইজ তৈরি করতে এই সার্ভে করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে মশার লার্ভার উৎস খুঁজতে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া ডিএনসিসিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মশা নিধনে ল্যাব স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপাতত জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাদের ল্যাব আপাতত ব্যবহার করা হবে।

পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে এডিস মশা সম্পর্কে সচেতনতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে বাফেলো টার্বাইন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ড্রয়িং বুক, নোভালিউরন, লার্ভিসাইডিং ওপর গুরুত্ব প্রদান, মশক নিধন কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা, জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মশার হট স্পট চিহ্নিতকরণ ও ব্রিডিং ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর সিটি।

শিশুদের ডেঙ্গু ও এডিস মশা বিষয়ে সচেতন করতে এক লাখ বই ছাপানো হয়েছে। এসব বই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি উত্তরের ১০টি অঞ্চলের নগরবাসীকে সচেতন করতে প্রতিদিন লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

এর আগে যা করেছিল উত্তর সিটি
২০২২ সালের জুলাই থেকে আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎপত্তিস্থল খুঁজতে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। ঢাকা উত্তরের অধীন প্রতিটি বাসা-বাড়িতে অত্যাধুনিক ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস খুঁজতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়। সিটি কর্পোরেশন ড্রোন থেকে ছবি ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যেসব বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া যায় তার একটি তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করে এবং বছরের অন্যান্য সময় মশক নিধন কার্যক্রমে এটি কাজে লাগায়।

এর আগে ২০২১ সালে ড্রোন দিয়ে ওষুধ ছিটিয়ে মশা মারার উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। রাজধানীর বনানী লেকে একটি ড্রোন ব্যবহার করে মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে কার্যক্রম চালিয়েছিল ডিএনসিসি। প্রতি মিনিটে ড্রোন ছিটাতে পারত পাঁচ লিটার মশার ওষুধ। প্রাথমিক ভাবে এটি ২০ লিটার ওষুধ বহন করতে সক্ষম। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফল হলে ডিএনসিসি’র জলাশয়, খাল বা লেকে মশা মারতে ব্যবহার করতে চেয়েছিল এমন ড্রোন। যদিও শেষ পর্যন্ত উদ্যোগটি সফল হয়নি।

মশা নিয়ন্ত্রণে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চলতি অর্থবছরে বাজেট কত?
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং যন্ত্রপাতি কিনতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) বাজেট ধরেছে ১১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মশক নিয়ন্ত্রণে ওষুধ বাবদ ৪৫ কোটি টাকা, আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, ফগার হুইল স্প্রে মেশিন পরিবহনে পাঁচ কোটি টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বিশেষ কর্মসূচিতে এক কোটি টাকা, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ৩০ কোটি টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে চিরুনি অভিযান পরিচালনার জন্য রাখা হয়েছ দুই কোটি টাকা। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ব্যয় করবে ৩০ কোটি টাকা।

যা বলছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা
মশক নিধনে কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এ সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সেলিম রেজা ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গু বেড়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমরা নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিএনসিসি ও বাংলাদেশ স্কাউট সদস্যদের যুক্ত করে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। মসজিদ, মাদ্রাসার ইমাম ও খতিবরা এবং স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত ওয়ার্ডগুলোতে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছি। অভিযানের মাধ্যমে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল এবং প্রজনন কেন্দ্র চিহ্নিত করে ধ্বংস করা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা সব দিক থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’

দুই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞ
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার ভোক্তাকণ্ঠকে বলেন, ‘দুই সিটি কর্পোরেশনের সব উদ্যোগকেই পজিটিভ হিসেবে দেখছি। কোনো উদ্যোগই অকার্যকর না। সব উদ্যোগই কম বেশি কার্যকর। এখন একটি উদ্যোগ বা যে উদ্যোগ নিলে সম্পূর্ণ রুপে এটা যাবে হয়তো সেটা সঠিক ভাবে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি উদ্যোগই কম বেশি কার্যকরি ভূমিকা রাখে।’

গত ২৪ ঘণ্টায় (২৩ অগাস্ট) সারাদেশে নতুন করে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই হাজার ৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ৪২৯ জনে। এছাড়া ডেঙ্গু জ্বরে একদিনে সারাদেশে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০৬ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন, মারা যান ২৮১ জন। ২০২১ সালে আক্রান্ত ছিলেন ২৮ হাজার ৪২৯ জন, মারা যান ১০৫ জন।

-এসআর