ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশে বর্ষা এলেই বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু দেরিতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ শুরু হলেও সেপ্টেম্বরে এসে চোখ রাঙাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগ। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ, মারা যাচ্ছেন অনেকেই।
গত দুই বছরের মতো এবারও মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুর ডেন-২ সেরোটাইপ বা ধরণে। তবে গত দুই বছর ঢাকাসহ দেশের মানুষ এই ডেন-২ সেরোটাইপে আক্তান্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এতে ভয়াবহতা কম দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউিট (আইইডিসিআর) এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫০ জন রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করেছে। এ পরীক্ষায় দেখা যায় ৬৯ দশমিক ২০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুরোগীর ধরণ ছিল ডেন-২।
চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গুর (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪) চারটি ধরণ রয়েছে। ডেঙ্গুর চারটি ধরনের একটিতে পজিটিভ হলে পরবর্তীতে ওই ধরণে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তেমন নেই। তবে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হতে পারে।
পর পর দুই বছর ডেঙ্গুর একই সেরোটাইপ বা ধরণে আক্রান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে আইইডিসিআরের সায়েন্টিফিক অফিসার (ভাইরোলজি বিভাগ) ডা. আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ বলেন, সাধারণত ডেঙ্গুর একটি সেরোটাইপের প্রাধান্য থাকে তিন থেকে চার বছর। এ সময় বড় একটি সংখ্যক মানুষ এই সেরোটাইপে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের মধ্যে ইমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি) হয়। গত বছরও সেরোপটাইপ-২ এর প্রাধান্য দেখা গেছে। যেহেতু এবার সেরোটাইপ (ডেন-২) রয়েছে, সুতরাং আগের সেরোটাইপটার জন্য মানুষের মধ্যে ইমিউনিটি আছে। সে হিসেবে বলা যায় ডেন-২ ঘায়েল করতে পারবে এমন সুযোগ কম। তবে ঢাকার বাইরে বড় সংখ্যক মানুষ যারা ডেন-২ আক্রান্ত হয়নি এখনো, তাদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত ডেন-২ বা সেরোটাইপ-২ এর প্রাধান্য ছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ছিল সেরোটাইপ-৩। এরপর ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালে সেরোটাইপ-২ প্রভাব বিস্তার করছে।