ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমানে দেশে ২২ লাখ মানুষ ক্যানসার আক্রান্ত। প্রতি বছর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে দেড় লাখ রোগী। এটা একটা ভয়াবহ অবস্থা।
রোববার বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ক্যানসার সচেতনতামূলক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজন করে এভারকেয়ার হাসপাতাল।
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ২০৩০ সালে যখন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন করতে যাবো, তখন সারা বিশ্বের ৭৭ শতাংশ ক্যানসার রোগী হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। যা বিশ্বের দুই মোট আক্রান্তের দুই তৃতীয়াংশ। সুতরাং আমরা খারাপ অবস্থায় আছি।
তিনি বলেন, আমরা খারাপ অবস্থায় আছি কয়েকটি কারণে। একটি হচ্ছে, আমরা অবহেলা করি রোগকে। কিংবা আমাদের রোগ আছে তবুও আমরা এড়িয়ে চলি। এমনকি ফোর্থ স্টেজে আমরা ব্রেস্ট ক্যানসারের রোগী নিয়ে আসি। যাকে আর বাঁচানো যায় না। অথচ, আর্লি ডায়গোনোসিস নিজেই করতে পারে। সেটা যদি আমরা শেখাতে পারতাম তাহলে অনেক রোগীকে বাঁচাতে পারতাম।
বিএসএমএমইউর ভিসি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনটি রোগকে প্রায়োরিটি দিয়েছেন। কিডনি, হার্ট এবং ক্যানসার রোগকে। তিনি আট বিভাগে আটটি হাসপাতাল তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আমরা বিভাগ অনুযায়ী রোগীদের সাহায্য করতে পারব।
তিনি বলেন, আমাদের রোগীরা আস্থাহীনতার জন্য চিকিৎসার জন্য পাশের দেশে চলে যায়। আমাদের দেশে যা হতো সেখানে গেলেও একই অবস্থা হয়। কিন্তু ওই দেশে চিকিৎসার পর তাদের আর কোনো অর্থ থাকে না। এ জন্য আমাদের আর্লি ডায়গোনোসিস করাটা প্রয়োজন। রোগীদের বুঝাতে হবে যে যেখানেই যাওয়া হোক চিকিৎসা একই হবে। এতে তাহলে সরাসরি বাইরে যাওয়াটা কমতো। আর আমরা যদি বাইরে যাওয়া রোধ করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের দেশের আর্থিক ক্ষতি হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবির বলেন, আমরা যদি প্রথম অবস্থাতেই ক্যানসার শনাক্ত করতে পারি সেটি শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাহলে কিন্তু আমাদের পাশের দেশগুলোয় যেতে হয় না। আর ক্যানসারের পরবর্তী চিকিৎসা (কেমোথেরাপি) ধাপগুলো কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের জন্য একটা বড় চাপ। এর চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। তাই আমরা মনে করি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কর্মক্ষম লোক অনেক বেশি। তাই তাদেরকে সুস্থ রাখা আমাদের জন্য জরুরি। আমাদের স্বাস্থ্যখাতে জোর দেওয়া খুবই জরুরি। স্বাস্থ্যখাতে তাই আমাদের বাজেট বাড়ানো উচিত।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব রেডিয়েশন অনকোলজিস্টের সভাপতি প্রফেসর ডা. কাজী মোশতাক হোসেন, এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা।