ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: শুধুমাত্র প্যাকেজিং এর অনুমতি নিয়েই শিশুখাদ্য উৎপাদন করায় ফুডল্যান্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) পণ্য উৎপাদনের অনুমতি দিয়ে থাকে। তবে সে অনুমোদন না নিয়ে কেবল প্যাকেজিং অনুমতি নিয়েই শিশুখাদ্য উৎপাদন করছিল একটি প্রতিষ্ঠান।
গাজীপুরে তাদের উৎপাদিত একটি পণ্য নজরে আসে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের। সেই পণ্যের পিছু নিয়ে তারা পৌঁছে যান রাজধানীর বসিলা এলাকায়। সেখানে নিরিবিলি পরিবেশে অনুমোদনহীন শিশুখাদ্য উৎপাদন করে চলেছে ওই প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির কারখানায় অভিযান শেষে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খান।
তিনি বলেন, গাজীপুরের একটি দোকানে এই নকল পণ্য তাদের নজরে আসে। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির কারখানা খুঁজে পান তারা। গাজীপুর থেকে তারা ঢাকায় আসেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রবেশমুখেই ১২ ধরণের সরকারি নানা সংস্থা থেকে গ্রহণ করা কাগজ সাটিয়ে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সেখানে নেই উৎপাদনের অনুমোদন।
তিনি আরও বলেন, ফুডল্যান্ড নামের এই প্রতিষ্ঠানের মান নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রবেশ করে পিলে চমকে উঠতে হতে পারে যে কাউকে। কেননা একটি অপরিচ্ছন্ন ও প্যাকেজিংয়ের মালামাল রাখা হয়, এমন স্থানেই তাদের মান নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। যেখানে পণ্য উৎপাদন করা হয় সে মেশিন পরিচ্ছন্ন হলেও তার আশপাশ ধুলায় পূর্ণ। পণ্য বাজারজাত করার জন্য যে বোতল ব্যবহার করা হয়, তাও রাখা হয়েছে অপরিচ্ছন্ন ভাবে।
তবে এসব পণ্য উৎপাদনে কি ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হতো তা প্রাথমিকভাবে জানাতে পারেনি অভিযান পরিচালনাকারীরা৷ তবে ফ্লেভারের নামে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হতো এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
অভিযানে কারখানাটি থেকে সাধারণ জুস ও ললিপপ জাতীয় আরেক ধরনের বিপুল পরিমাণ তৈরি পণ্য ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পণ্য প্যাকেজিংয়ের বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামও পাওয়া গেছে। যা কয়েকটি ট্রাকভরে আলামত হিসেবে নিয়ে যেতে দেখা গেছে৷
এসময় প্রতিষ্ঠানটির মালিকসহ তিন জন আটক করেছে জিএমপি। কি পরিমাণ পণ্য জব্দ করা হয়েছে এবং এর ক্ষতিকারক দিক কি কি তা বুধবার গাজীপুরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জিএমপি ডিবির উপ-কমিশনার।
গাজীপুর পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের একটি দল। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের নেতৃত্বে ওই দলটি প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র ও মেশিনপত্র দেখেন।
এরপর সাংবাদিকদের মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, প্রতিষ্ঠানটির পণ্য প্যাকেজিংয়ের অনুমতি আছে। তবে মান নিয়ন্ত্রণের কোনো কাগজ তারা পাননি।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির মালিক দাবি করেছেন, বিএসটিআইয়ের লোক এখানে এসে পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু আমি বিএসটিআইতে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছেন তারা এই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে আসেননি এবং এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনের অনুমতি নেই। আমরা এখন এই প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দিয়ে যাচ্ছি।