ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: রাজধানীর কল্যাণপুরে অভিযান চালিয়ে পেট্রোল পাম্পে তেল চুরির প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
তেল চুরির অপরাধে সোহরাব ফিলিং স্টেশনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই পাম্পেই সোমবার মোটরবাইকের অকটেন কিনতে গিয়ে কম পাওয়ার পর প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন মো. ইশতিয়াক নামে ইস্টার্ন ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা।
গণমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় তার প্রতিবাদের খবর ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাজধানীর ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রাষ্ট্রীয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই।
অভিযানকারী দল সোহরাব ফিলিং স্টেশন ছাড়াও খালেক ফিলিং স্টেশন ও রহমান ফিলিং স্টেশনে গিয়ে তেল পরিমাপে কম দেওয়ার প্রমাণ পায়।
অভিযানে থাকা বিএসটিআইয়ের নির্বাহী হাকিম মোহাম্মদ হাসিব সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, “সোহরাব ফিলিং স্টেশনে ২টা ডিজেলের নজেলে কম পাওয়া গেছে। এজন্য দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
সোহরাব সার্ভিস স্টেশনের ব্যবস্থাপক বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “তারা এসে আমাদের সব মেশিন পরীক্ষা করেছেন। হিসাবে অল্প পরিমাণ তেল কম পেয়েছে। যে পরিমাণ কম পেয়েছে, সেটি অনেক ক্ষেত্রে ড্রামে লেগে থাকে।”
ইশতিয়াক অকটেন কিনতে গিয়েছিলেন, কিন্তু সোহরাব ফিলিং স্টেশনে অকটেনের নজেলে তেল কম দেওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবারের অভিযানে ধরা পড়েনি।
এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক (সিএম) রিয়াজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, “সোহরাব ফিলিং স্টেশনে আমরা যে অনিয়ম পেয়েছি, সেটা ভিন্ন।
“ওই যুবক অভিযোগ করেছিলেন, তাকে ৫ লিটার অকটেনের ভাউচার দেওয়া হলেও বাস্তবে মেপে দেওয়া হয়েছে তিন লিটার বা তার চেয়ে একটু বেশি। এটাকে চুরি না বলে প্রতারণা বলা হয়। এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার দেখবে। আর আমরা অনিয়ম পেয়েছি ডিজিলের নজেলে। সেখানে সরাসারি পরিমাণে তেল কম দেওয়া হচ্ছিল।”
নির্বাহী হাকিম হাসিব জানান, সবচেয়ে বেশি অনিয়ম পাওয়া গেছে খালেক ফিলিং স্টেশনে। ১০ লিটার অকটেনে ৩১০ মিলি লিটার কম দেওয়া হচ্ছিল। অর্থাৎ প্রতিলিটারে ৩১ মিলিলিটার কম পাচ্ছিলেন গ্রাহক।
“ডিজেলের একটা নজেলে ১০ লিটারে ৫০ এমএল কম পেয়েছি। ডিজেলের মেশিন ছিল ৬টা, যার মধ্যে একটাতে কম পাওয়া গেছে। অকটেন ছিল ১০টা ইউনিট; এরমধ্যে দুইটাতে কম পেয়েছি। তিনটি নজেলে কম পাওয়ার কারণে তাদেরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
রহমান ফিলিংয়ে ডিজেলের একটি নজেলে তেল কম পাওয়া গেছে। এরজন্য এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সবমিলিয়ে সোহরাবসহ ৩টি ফিলিং স্টেশনে থেকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে বিএসটিআই।
বিএসটিআই থেকে পুনরায় মিটার ক্যালিবেশন ছাড়া এসব নজেল দিয়ে তেল বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে জানান নির্বাহী হাকিম হাসিব।
তিনি বলেন, “যেসব নজেলে কম পেয়েছি, জরিমানার পাশাপাশি আমরা এগুলো লক করে দিয়েছি। বিএসটিআই থেকে নতুন করে ক্যালিব্রেশন ছাড়া তারা এসব নজেল থেকে তেল বিক্রি করতে পারবে না “
অভিযানের বিষয়ে বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক রিয়াজুল বলেন, কারও অভিযোগে নয়, এটা ছিল তাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ।