গরুর মাংসে কাপড়ের রং, খাসির বলে ছাগীর মাংস বিক্রি

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: গরুর মাংস সতেজ এবং টাটকা দেখিয়ে ক্রেতাকে আকর্ষিত করতে মাংসের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রং। একই সঙ্গে খাসির মাংস বলে চালিয়ে দিচ্ছে ছাগীর মাংস।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

এ সময় নিউমার্কেটের বনলতা কাঁচাবাজার মার্কেটে মাছ-মাংসের দোকান, কাঁচাবাজার ও মুদি-দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দোকানে ওজন, পণ্যের মেয়াদ, গুণগত মান যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়।

অভিযানের শুরুতেই মাংসের বাজারে জিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের দোকানে মাংসে কাপড়ের রং মেশানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে কোথা থেকে এই মাংস আনা হয়েছে তার কোনো চালান ফরমও দেখাতে পারেননি দোকানের মালিক মো. জিয়া উদ্দিন। এসব অপরাধ তাকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

মাছ বাজারের ৫ নম্বর দোকানে ডিপ ফ্রিজে রান্না করা ও কাঁচা মাছ একইসঙ্গে রাখা ও চালান ফরম দেখাতে না পারায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা দিতে না পারায় দোকানের কর্মচারী মাহবুব হোসেনকে আটক করা হয়। অভিযান শুরুর পরপরই ২টি মাংসের দোকান ও মুদির দোকান খোলা রেখেই পালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রয়োগ) ড. সহদেব চন্দ্র সাহা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিএম মোস্তফা কামাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি সুব্রত কুমার দাস, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম ও ইমরান হোসেন মোল্লা।

মাছের তুলনায় মাংসের দোকানে অসঙ্গতির পরিমাণ বেশি উল্লেখ করে উল্লেখ করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিএম মোস্তফা কামাল বলেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার কারণে মাছের বাজার ভেজালের পরিমাণ অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু মাংসের দোকানগুলোতে ওজনে কারচুপি, ওজন বাড়াতে পানি মেশানো, তাজা রাখতে রং মেশানো, বকরি জবাই করে খাসির মাংস হিসেবে বিক্রি করাসহ নানা সমস্যা সামনে এসেছে। তারা যে রং ব্যবহার করে সেগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব মাংস খাওয়ার ফলে দেহে ক্যান্সারের জীবাণু সৃষ্টি হয়। মাছের বাজারেও আমরা দেখেছি কোনো মাছের জেলি মেশানো হয়েছে কিনা। নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব করা থেকে বিরত থাকবে।

অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান বলেন, নিউমার্কেটের কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রায় সবগুলো দোকানেই ছোট-বড় বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। যাদের অসঙ্গতি ছোট ছিল তাদেরকে আমরা সতর্ক করেছি। আর বড় অপরাধের জন্য দুটি দোকানে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের এমন অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।