ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাজারে (কৃষি মার্কেট) পাটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পাট অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের থ্রি স্টার রাইস এজেন্সি এবং ফরিদপুর রাইস এজেন্সি। এর মধ্যে প্রথম প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার এবং দ্বিতীয়টিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শনিবার (৪ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাজারে (কৃষি মার্কেট) পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সেলিনা আক্তারের (অতিরিক্ত সচিব) নেতৃত্বে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যাবহার আইন, ২০১০’ অনুযায়ী ১৯টা পণ্যে পাটের বস্তার সঠিক ব্যবহার, পাটের বস্তার যোগান ও দেশব্যাপী পরিচালিত অভিযানের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে এই জরিমানা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে কৃষি মার্কেটের সব পাইকারি চাল ব্যবসায়ীকে আগামী এক মাসের মধ্যে বিভিন্ন দোকানে থাকা বিদ্যমান প্লাস্টিকের বস্তায় থাকা চাল বিক্রি করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো ব্যবসায়ী প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সেলিনা আক্তারের নেতৃত্বে দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। তারা হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ, সালেহা নূর। এছাড়াও পরিদর্শক দলে ছিলেন পাট অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) এসএম সোহরার হোসেন, সমন্বয় কর্মকর্তা মো. সওজাতুল আলম, মুখ্য পরিদর্শক মাহবুব হোসেন এবং পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম।
ড. সেলিনা আক্তার বলেন, দেশে কোথাও পাটের বস্তার কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পাটের বস্তা রয়েছে। কিন্তু অনেক স্থানে ২ টাকা কম বেশির কারণে মিল মালিকরা পাটের বস্তা নিচ্ছেন না। অথচ একটা পাটের বস্তা ৩/৪ বার ব্যবহার করা যায়। প্লাস্টিকের বস্তার তুলনায় পাটের বস্তার খরচ কম আছে। ফলে কোনো অজুহাতে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় পাট অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহরার হোসেন বলেন, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অভিযান চালিয়ে পাটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করায় ২টি দোকানকে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার করতে উচ্চ আদালতে ৩৫টি রিট করা হয়েছিল। আমরা খবর নিয়ে দেখেছি ভুল তথ্য দিয়ে উচ্চ আদালতে এসব রিট করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল বাজারে পাটের বস্তার সংকট রয়েছে। বাস্তবে বাজারে চটের বস্তার কোনো সংকট নেই। ইতোমধ্যে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ২৫টি মামলার রিট খারিজ করে দিয়েছেন। বাকি ১০টি মামলার রিটও দ্রুত নিষ্পত্তি করে সরকারের পক্ষে রায় দেবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যাবহার আইন, ২০১০’ অনুযায়ী ১৯টা পণ্যে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক রয়েছে। এসব পণ্যে কেউ যদি প্লাস্টিকের ব্যবহার করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী অভিযান চলছে এবং এসব অভিযান সারা বছর চলে। ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে সবাইকে সচেতন করার জন্য একটি বিশেষ অভিযান চলছে।
মোহাম্মদপুর সরকারি কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমাদেরকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব এর মধ্যে আমাদের কাছে যেসব প্লাস্টিকের বস্তায় চাল রয়েছে সেগুলো বিক্রি করে ফেলতে। নতুন করে এই বাজারে আর প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করা হবে না।