ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: গ্রাহকদের ঠকানো যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। যে যেভাবে পারছে ঠকিয়ে যাচ্ছে। কেউ ওজনে কম দিয়ে, কেউবা ভালো পণ্য বলে খারাপ পণ্য চালিয়ে দিচ্ছে। কথায় কথায় দাম বৃদ্ধি তো নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
ওজনের কম দেওয়ায় এবার হাতেনাতে ধরা পড়লো বিখ্যাত মুসলিম সুইটস। বাহ্যিক দিক দিয়ে মিষ্টির জগতে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতার কথা বললেও প্রতিষ্ঠানটি ভেতরে সদরঘাট। এছাড়া দই ওজনে কম দিয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা করছে এই প্রতিষ্ঠান।
রোববার নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মুসলিম সুইটসে অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী।
মুসলিম সুইটসে প্রতি কেজি দই-এ ১০৮ গ্রাম কম দেওয়ার বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানের শো-রুমের পেছনে ছোট কারখানার ভেতরে যেতেই চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। এমন নোংরা পরিবেশ হয়তো গোয়াল ঘরেও থাকে না। সম্পূর্ণ ফ্লোরে ময়লার স্তুপ। যেন শেওলা পড়ে আছে। ভয়ভীতিহীন ভাবে যেখানে ইচ্ছে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে তেলাপোকা। দেখে মনে হবে হয়তো এটা তেলাপোকার রাজত্ব। নাড়ু বানানোর জন্য উপকরণ রাখা হয়েছে মাকড়শার বুনানো জালের মধ্যে। সব মিষ্টি, নাড়ু, দই খোলা অবস্থায় রাখা হয়েছে।
এমন আরও অপরাধে মুসলিম সুইটসকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
পরে পল্টনের সকাল-বিকাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে অভিযানে যান ভোক্তা কর্মকর্তারা। এ হোটেলের ভেতরে রান্নাঘর, খাবার রাখার জায়গা এবং বাথরুম সব একসঙ্গে। বাথরুমের মুখেই রাখা হয়েছে রান্না করা খাবার, ফ্রিজে একসঙ্গে রান্না করা এবং কাঁচা খাবার রাখা হয়েছে। মেঝে অপরিচ্ছন্ন।
এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে, ফুড ফ্যান্টাসি রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যায়, দই-এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ক্রেতাদের খাওয়ানোর জন্য ফ্রিজের সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফ্রিজের মধ্যে রান্না করা এবং কাঁচা খাবার একসঙ্গে রাখা হয়েছে, পঁচা শসা সংরক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া খাবার রাখার ঘরে তেলাপোকা দৌঁড়াতে দেখা গেছে।
পরে ফুড ফ্যান্টাসি রেস্টুরেন্টকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘আজ তিনটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অপরাধে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’