ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমন খবরে বাজারে বিক্রি বেড়ে গেছে চার্জার লাইট ও ফ্যানসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের।
এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের আখের গোছাতে শুরু করেছেন। ফলে এসব পণ্যের দাম দ্বিগুন/তিনগুন বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের ক্রয়মূল্যের সঙ্গে মুনাফার সামঞ্জস্য রয়েছে কি না তা তদারকি করতে রাজধানীর পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডের ইলেকট্রিক মার্কেটে (পাইকারী মার্কেট) অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ না মেনে ২০ শতাংশের বেশি মুনাফা করায় দ্য লাকি ইলেকট্রিক এজেন্সিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরের এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (তদন্ত) শাহনাজ সুলতানা এবং সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) রজবী নাহার রজনী।
অভিযানের শুরুতেই ‘দ্য লাকি ইলেকট্রিক এজেন্সি’ নামের একটি দোকানে তদারকি করা হয়। এ সময় একটি চার্জার ফ্যানের দাম চাওয়া হয় তিন হাজার ৫০ টাকা। এ দামের প্রেক্ষিতে ক্রয় মূল্যের পাকা রশিদ চাওয়া হয়। তবে পাকা রশিদ দেখাতে না পারলেও ব্যবসায়ী জানান দুই হাজার ৭০০ টাকায় ক্রয় করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোন তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে ওই ব্যবসায়ী যেখান থেকে পণ্যটি পাইকারি কিনেছেন সে দোকানে নিয়ে যান ভোক্তা কর্মকর্তাদের। সেই পাইকারী ব্যবসায়ী জানান, যে পণ্যটি তিন হাজার ৫০ টাকা বিক্রির জন্য চাওয়া হয়েছে সেটির পাইকারী মূল্য দুই হাজার ৫০০ টাকা।
তদারকি চলাকালীন সেখানে নবাবপুর ইলেকট্রিক মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত হোন। ভোক্তা কর্মকর্তারা তাদের অবগতির জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ সম্পর্কে জানান। কিন্তু এসব আইনের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা তেমন অবগত নন। পণ্য আমদানী করার পর আমদানীকারক সকল খরচ এবং লাভ রেখে পণ্যের মোড়কে মূল্য লিখে দেবে এবং আমদানীকারকের তথ্য দিতে হবে, এ বিষয়ে তেমন অবগত নন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি, নিজেদের ইচ্ছেমত লাভ করতে পারবেন তারা।
তদারকি শেষে ক্রয় ভাউচার দেখাতে না পারায় এবং ক্রয় মূল্য থেকে অধিক লাভে পণ্য বিক্রি করার অপরাধে দ্য লাকি ইলেকট্রিক এজেন্সিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তদারকির বিষয়ে শাহনাজ সুলতানা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আইন মেনে ব্যবসা করতে হবে। ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুন্ন হয় এমন কোন অভিযোগ থাকলে অবশ্যই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। আপনারা যারা ব্যবসায়ী নেতা আছেন, তারা অবশ্যই সকল ব্যবসায়ীদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ সম্পর্কে অবগত করবেন। যাতে সকল ব্যবসায়ী আইন মেনে ব্যবসা করেন।