ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) জানিয়েছে, তাদের পরীক্ষাগারে দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া ১৭টি ব্র্যান্ডের রং ফরসাকারী ক্রিমে বিপজ্জনক মাত্রায় পারদ (মার্কারি) পাওয়া গেছে। পারদের পাশাপাশি এসব ব্র্যান্ডের ক্রিমে মাত্রাতিরিক্ত হাইড্রোকুইনোন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি ব্র্যান্ডই পাকিস্তানি।
মাত্রার চেয়ে বেশি পারদ ও হাইড্রোকুইনোন মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে বিএসটিআই। সংস্থাটি বলছে, এসব ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হতে পারে।
বিএসটিআই গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তারা খোলা বাজার থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রং ফরসাকারী ক্রিমের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এতে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় মার্কারি ও হাইড্রোকুইনোনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ক্ষতিকর চিহ্নিত হওয়া ১৭টি ব্র্যান্ডের মধ্যে ১৪টি পাকিস্তানি, একটি চীন ও বাংলাদেশের এবং অপরটি নামহীন।
চামড়ায় ব্যবহার্য ক্রিমের সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মান অনুযায়ী মার্কারির গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ১ পিপিএম। আর হাইড্রোকুইনোনের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ৫ পিপিএম। কিন্তু উল্লিখিত ১৭টি ব্র্যান্ডের অধিকাংশ ক্রিমে মার্কারির মাত্রা পাওয়া গেছে ৪০ থেকে ২২২ পিপিএম। আর দুটি ক্রিমে ৮ পিপিএম ও ৩০ পিপিএম মাত্রার হাইড্রোকুইনোন পাওয়া গেছে।
পরীক্ষায় পাকিস্তানের গৌরি কসমেটিকস (প্রাইভেট) লিমিটেডের গৌরি ব্র্যান্ডের ক্রিমে ১০২ দশমিক ৯২ পিপিএম, এসঅ্যান্ডজে মার্কেটিং ব্র্যান্ডের ক্রিমে ২০৯ পিপিএম, কিউসি ইন্টারন্যাশনালের ক্রিমে ২১৬ পিপিএম, ক্রিয়েটিভ কসমেটিকসের ডিউ ব্র্যান্ডের ক্রিমে ১৩৩ পিপিএম, গোল্ডেন পার্ল কসমেটিকসের ক্রিমে ১২৪ পিপিএম ও পুনিয়া ব্রাদার্সের ক্রিমে ১৮৩ পিপিএম পারদ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া পাকিস্তানের নুর গোল্ড কসমেটিকসের ক্রিমে পারদের মাত্রা ২২২ পিপিএম ও পাকিস্তানের হোয়াইট পার্ল কসমেটিকসের ক্রিমে ২০১ পিপিএম পাওয়া গেছে। আর পাকিস্তানের আনিজা কসমেটিকসের ক্রিমে হাইড্রোকুইনোনের মাত্রা ৩০ পিপিএম ও বাংলাদেশের গোল্ড কসমেটিকসের ক্রিমে ৮ পিপিএম পাওয়া গেছে।
এর আগে ২০২০ সালের মার্চ মাসে এসব ব্র্যান্ডের অধিকাংশকে ক্ষতিকারক আখ্যায়িত করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিএসটিআই। বাজারে এসব ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযানও চালাচ্ছিল সংস্থাটি। কিন্তু তারপরও বাজারে এসব ব্র্যান্ডের রং ফরসাকারী ক্রিম নিয়মিত বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে আবার বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিএসটিআই।
বিএসটিআই জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে অনতিবিলম্বে মাত্রাতিরিক্ত পারদযুক্ত এসব রং ফর্সাকারি ক্রিম বিক্রয় ও বিতরণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় আমদানিকারক, সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের (অনলাইনসহ) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। একই সঙ্গে বিএসটিআইর অনুমোদনহীন এসব ক্রিম ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য ক্রেতাদের সতর্ক করেছে সংস্থাটি।