হাজার টাকার কাঁচা মরিচ এখন ১৬০ টাকা, মাঠে ভোক্তা অধিদপ্তর

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: কাঁচা মরিচের বাজার নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে একযোগে অভিযানে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানীসহ দেশের সকল বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে একযোগে কাঁচা মরিচের মূল্য এবং চিনির মূল্য ও মজুদ তদারকির লক্ষ্যে বাজার অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাজধানীতে তিনটি টিম অভিযান পরিচালনা করে।

আমদানিকৃত ভারতের কাঁচা মরিচ দেশের বাজারে আসার পর থেকেই দেশি কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করে। রোববার সকালে যে কাঁচা মরিচের দাম বাজার ভেদে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হলেও রাতেই প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩৫০-৪০০ টাকায়। সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে ভারত থেকে আমদানি করা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, ভারতের মরিচ বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করায় দেশি মরিচের দাম কমে গেছে।

এদিকে, ভোক্তা অধিদপ্তরের বাজার তদারকিতেও কাঁচা মরিচের দাম কমে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। তদারকিতে বিক্রয় মূল্য টানানো না থাকা এবং ক্রয় ভাউচার দেখাতে না পারায় রাজধানীর কাওরান বাজারের তিন ব্যবসায়ীকে মোট আড়াই হাজার টাকা এবং সাদেক খান মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সতর্কতামূলক জরিমানা করা হয়।

কাওরান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম রাখা হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা সেই কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়।

ঢাকায় ভোক্তা অধিদপ্তরের তিনটি টিমের কারওয়ান বাজার, সাদেক খান মার্কেটে অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অভিযোগ) মো. মাসুম আরেফিন, সহকারী পরিচালক সোহেল চাকমা। মিরপুর শাহ আলী মার্কেট এলাকায় নেতৃত্ব দেন সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী ও মো. মাগফুর রহমান। শান্তিনগর ও মালিবাগ এলাকায় অভিযানের নেতৃত্ব দেন সহকারী পরিচালক ইন্দ্রাণী রায় ও মো. শাহ আলম।

মাসুম আরেফিন বলেন, ‘নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ভোক্তা অধিদপ্তর রাজধানীসহ সারাদেশে কাঁচা মরিচের বাজারে তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়া কাঁচা মরিচের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আজকে কাওরান বাজারে কাঁচা মরিচের পাইকারি বাজার দর যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। খুচরা বাজারে সেই কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।’

সিন্ডিকেট নিয়ে তিনি বলেন, ‘কাঁচা মরিচ পচনশীল পণ্য। এখানে সিন্ডিকেট থাকার কথা নয়। ঈদের ছুটি এবং ভারি বর্ষণ হওয়ায় কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন সংস্থার একত্রে কাজ করার ফলে এই বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।’

আমদানির খবরে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করার পর কেন তদারকি বাড়লো আগে কেন নয়- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুম আরেফিন বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল। সেগুলো হয়তো মিডিয়াতে আসেনি। আমরাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সংস্থা কাজ করেছে। সমস্যা তৈরি হলে সরকারের সব সংস্থাই কাজ করে। মিডিয়াতে হয়তো কিছু আসে না, হয়তো কিছু আসছে। কোরবানি ঈদে ফোকাসটা চামড়া নিয়ে ছিল। কিন্তু আমরা বাজারে ছিলাম, আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল। আমরা যদি কাজ না-ই করতাম তাহলে এতো দ্রুত সময়ে এই ফলাফল পেতাম না।’

এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারে অভিযান চালিয়েছেন ভোক্তা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান। ক্রয় রশিদ না থাকা এবং মূল্য তালিকা না থাকার দায়ে চার প্রতিষ্ঠানকে মোট ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

-এসআর