ইলিশে অতিরিক্ত মুনাফা, ৪২ হাজার টাকা জরিমানা ভোক্তা অধিদপ্তরের

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রাজধানীতে ভোক্তাদের জিম্মি করে ইলিশ মাছে অতিরিক্ত লাভ করায় পাঁচ আড়তদারকে মোট ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

বুধবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কারওয়ান বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাগফুর রহমান এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম।

কারওয়ান বাজারে অভিযানে দেখা যায়, আড়তে ইলিশ মাছ ক্রয় সংক্রান্ত কোনো প্রকার তথ্য/পাকা ক্যাশ মেমো সংরক্ষিত নেই, ইলিশ মাছ বিক্রির পাকা ক্যাশ মেমো প্রদান করা হচ্ছে না, পাইকারি ১৪৫০ টাকা কেজি দরে ইলিশ মাছ ক্রয় করে খুচরা ২২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

এসব অপরাধে পাঁচ জন আড়তদারকে ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভবিষ্যতে ইলিশ মাছ ক্রয় এবং বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রে পাকা ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ করা এবং প্রদান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

অপরদিকে, যাত্রাবাড়ী আড়তে অভিযানে দেখা যায়, মনপুরা, ভোলা, মহীপাল, ফেনী, চাঁদপুর ও পাথরঘাটা থেকে ইলিশ মাছ যাত্রাবাড়ী বাজারে আসে। এ বাজারে দুই শতাধিক ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী আছে। ১.৫ কেজি সাইজের ইলিশ ১৮০০ টাকা প্রতি কেজি, ১ কেজি সাইজের ইলিশ ১৬০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১৪৫০-৭০ টাকা, ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ৯০০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে। কমিশন এজেন্ট ৩ শতাংশ হারে কমিশনে বিক্রয় কার্যক্রম করছে। কোনো ব্যবসায়ী পাকা রশিদ সংরক্ষণ ও সরবরাহ করছেন না, মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা নেই।

এসব বিষয়ে ইলিশ ব্যবসায়ীদের মৌখিক ভাবে সতর্ক করা হয়েছে এবং যৌক্তিক মূল্যে বিক্রয় করা ও সহজ দৃশ্যমান স্থানে মূল্যে তালিকা প্রদর্শন করতে এবং সংশ্লিষ্ট ভাউচার সংরক্ষণ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, সরকার ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ খবর জানা মাত্রই মাছ ব্যবসায়ীরা অযৌক্তিক ভাবে কেজিপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এসব নির্মূল করতে হবে।

তিনি বলেন, আড়তদাররা যে দামে ইলিশ বিক্রি করছেন, সেটি যৌক্তিক কি না তাতে সন্দেহ রয়েছে। বিক্রির পাকা রশিদও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা ১৫৫০ টাকায় কিনে ২২০০ টাকায় ইলিশ বিক্রি করছেন। প্রায় ৬৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছেন। ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে ইলিশ। কেনাবেচার রশিদ সংরক্ষণ করা গেলে ইলিশের দাম কমবে।

অভিযান শেষে আবার বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, দামের পাশাপাশি ওজনেও কারসাজি করা হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা এর মাধ্যমেও ভোক্তাদের ঠকিয়ে আসছেন। ব্যবসায়ীদের মন মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। জেল-জরিমানা করে এসব ঠিক করা যাবে না।