ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সরকার নির্ধারিত দামের থেকে অতিরিক্ত দামে ১২ কেজি এলপি গ্যাস বিক্রি করার অপরাধে দুই প্রতিষ্ঠানকে মোট এক লাখ টাকা এবং নকল চিনি, ভোজ্যতেল ক্রয় এবং বিক্রির পাকা রশিদ না থাকার অপরাধে আরও তিন প্রতিষ্ঠানকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল।
অভিযানের শুরুতে ডিমের বাজার তদারকি করা হয়। সেখানে দেখা যায়, প্রত্যেক ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত দামের থেকে অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রি করছেন। তবে প্রত্যেক দোকানীর কাছে পাকা রশিদ ছিল। এসব পাকা রশিদ সংগ্রহ করে ভোক্তা অধিদপ্তর। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে এসব ডিম অতিরিক্ত দামে ক্রয় করা হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানেও তদারকি করবে সংস্থাটি।
পরে ভোজ্যতেলের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, কোনো প্রকার লেবেল এবং মূল্য ছাড়াই ভোজ্যতেল বোতলজাত করে বিক্রি করছে। এছাড়া এসব তেল কেনার কোনো ক্রয় রশিদ নেই। যথাযথ ভাবে মূল্য তালিকাও টানানো হয়নি। এছাড়া একটি দোকানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সিল নকল করে প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি করতে দেখা যায়। চিনি সাপ্লায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিভ্রান্তকর তথ্য দিতে থাকেন। সাপ্লায়ারকে যথাযথ কাগজপত্রসহ জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ১২ কেজির এলপি গ্যাস সিলেন্ডারের দাম ১ হাজার ৪২১ টাকার (বুধবার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৫৫ টাকা) পরিবর্তে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা দরে বিক্রি করছিল। ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অপরাধে দুই ব্যবসায়ীকে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে বিষয়ে আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, বাজারে এসে দেখলাম ডিম তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে যেখান থেকে ক্রয় করেছে সেখানকার পাকা ক্যাশ ম্যামো ছিল। এখন আমরা এই পাকা ক্যাশ ম্যামোর ভিত্তিতে কেন তারা বেশি দামে বিক্রি করলো অর্থাৎ তেজগাঁও যে ডিম ব্যবসায়ীরা রয়েছেন তাদের ওখানে অনুসন্ধান করা হবে। এবং যথাযথ আইনগত যে ব্যবস্থা আছে পরবর্তীতে সেটি নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ১২ কেজি এলপি গ্যাস সরকার কর্তৃক যেটা নির্ধারিত ছিল তার থেকে অধিক দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সেই অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে দেখলাম, এখানে পাইকারি ব্যবসায়ী যিনি ভোজ্যতেলের ডিও ক্রয় করে থাকেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে তিনি কি দামে ক্রয় করেছেন এবং কি দামে বিক্রি করছেন সেই সংক্রান্ত কোনো তথ্যই তার কাছে নেই। এবং পাশে আরও একটি দোকানে দেখলাম, সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের নামে তারা নকল চিনি বিক্রি করছে। যথাযথ সোর্স নেই। সোর্সকে আমরা ফোন দিলে তার ঠিকানাও যথাযথ নয়। এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এই চিনি নকল। এবং সরকার নির্ধারিত চিনির যে দাম তার থেকে অধিক দামে বিক্রির প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করলাম।
আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, এ সকল অপরাধে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করে আদায় করা হয়েছে।