ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বাজারে আজ সোমবার থেকে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৫০ টাকা কম দামে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। তবে এই ঘোষণায় বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজারে আগের দামেই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে।
তবে বিক্রেতারা বলেছেন, কেউ পরিমাণে বেশি নিলে বা ক্রেতা ভেদে অনেক সময় তাঁরা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে মাংস বিক্রি করেন।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক কর্মশালায় ঘোষণা দিয়েছিলেন যে সোমবার থেকে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করা হবে।
আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে এক দাম ৭৫০ টাকায়। দুই সপ্তাহ ধরে দাম একই রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর বাজারে গরুর মাংসের দাম আরও একটু বেশি ছিল। তখন ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল গরুর মাংস। এরপর একটু কমেছে। তবে মাংসের দাম ৫০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পরে বাজারে মাংসের দাম কমেনি। কমার সম্ভাবনাও কম।
কারওয়ান বাজারের মাংস বিক্রেতা মোহাম্মদ হাফিজ বলেন, ‘মাংসের দাম তখন কমবে, যখন আমরা কম দামে গরু কিনতে পারব। এছাড়া যে যেভাবে ঘোষণা দিক না কেন, দাম কমার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমি বাড়তি দামে গরু কিনে, কম দামে মাংস বিক্রি করব না। গরুর দাম কমলে স্বাভাবিক ভাবে মাংসের দাম কমে আসবে।’
প্রায় একই সুরে কথা বলেন কারওয়ান বাজারের আরও জনা পাঁচেক মাংস বিক্রেতা।
রাজধানীর অন্য বাজারগুলোর মধ্যে মিরপুর ১ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটের মোল্লা গোশত বিতানের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছি। গতকালও এই দামেই বিক্রি করেছি। তবে পরিচিত কোনো ক্রেতা হলে বা কেউ পরিমাণে বেশি নিলে, তাঁর কাছ থেকে কমায়ে রাখি। এটা সব দোকানদারই করেন।’
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ঢাকার বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগেও বাজারে এই দামেই গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। এমনকি এক মাস আগেও দাম এটাই ছিল। আর গত বছরের এই সময়ে বাজারে গরুর মাংসের প্রতি কেজির দাম ছিল ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। টিসিবির হিসাবে, গত বছরের তুলনায় বাজারে এখন গরুর মাংস কেজিতে ৭০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে।
গরুর মাংসের দাম কমানো বিষয়ে অনুষ্ঠিত রোববারের কর্মশালায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘প্রায়ই ভোক্তারা গরুর মাংসের উচ্চ মূল্যের বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে গরুর মাংসের দাম আমাদের দেশের তুলনায় কম।’
অনুষ্ঠানে বিডিএফএ সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও কয়েক বছর ধরে দাম প্রতিনিয়ত বেড়েছে। সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে কাজ করা গেলে মাংসের দাম কমানো সম্ভব। মাংসের মূল্য হ্রাস করে ভোক্তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে আনতে সাত দফা সুপারিশ করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে জাত উন্নয়ন, উন্নত জাতের ঘাস উদ্ভাবন ও খামারিদের প্রশিক্ষণের মতো বিষয়।’
সূত্র, প্রথম আলো।