রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিদেশ থেকে অক্সিজেন জেনারেটর আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘অক্সিজেন নিয়ে আপাতত কোনো সঙ্কট নেই। আগামী দিনগুলোতেও সঙ্কটের কারণ দেখি না। বর্তমানে যে পরিমাণ অক্সিজেনের চাহিদা রয়েছে তার চেয়ে আড়াই থেকে তিনগুণ অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বিদেশ থেকে অক্সিজেন জেনারেটর আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে হাইফ্লো ন্যাজেল ক্যানুলা ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পর্যাপ্ত সংখ্যক সরবরাহ করা হয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা এখন ২০ হাজারের বেশি রয়েছে। করোনা নমুনা শনাক্তে ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪৩টি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার উন্নতি সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। এটি আশা জাগানিয়া খবর হলেও এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। কারণ রাজধানী থেকে গাদাগাদি করে গ্রামের বাড়ি ফেরার ঘটনা উদ্বেগজনক। লকডাউন শিথিলতার কারণে যদি এমনটা চলতে থাকে তাহলে ঈদের পর পরিস্থিতি ভালো থেকে খারাপের দিকে চলে যেতে পারে, সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে।
‘ভারতীয় যে ভ্যারিয়েন্টটি এসেছে সেটিকে সতর্কতার সাথে দেখা উচিত। এর প্রতি আমাদের বিশেষ মনোযোগ আছে। দেশবাসী ভয় না পেয়ে এ পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারলে বর্তমানে করোনা সংক্রমণের যে স্থিতি অবস্থা রয়েছে তা ধরে রাখা সম্ভব হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতের যে ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত হয়েছে তার প্রতি নজরদারি করা হচ্ছে। ভারত থেকে যেসব যাত্রী আসছেন তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য স্থল বন্দরসমূহকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসন সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে রেফার করা হচ্ছে অন্যথায় যে যেই স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছেন তাদেরকে সেখানেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যারিয়েন্ট যেটাই হোক না কেন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রায় একই। সুতরাং করোনা সংক্রমণমুক্ত হতে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।’
সামনে বর্ষাকাল। প্রাক বর্ষা মৌসুমে পরিচালিত এক জরিপে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বেশকিছু এলাকায় বিপুল পরিমাণ এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ করোনাকালে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’তাই তিনি সবাইকে সচেতন থাকতে এবং জ্বর হলে ঘরে বসে না থেকে হাসপাতালে এসে ডেঙ্গু জ্বর কিংবা করোনা হলো কি-না তা পরীক্ষা করে দেখার অনুরোধ জানান।