রোজা শুরু হতে এখনো এক সপ্তাহ বাকি। এর মধ্যেই বাজারে শুরু হয়েছে নানা রকম কারসাজি। ‘মজুদ পর্যাপ্ত আছে, দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়াতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ প্রতিবারের মতো এবারও রোজা সামনে রেখে এসব আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
বাজারে প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামই বাড়ছে। প্রতিবছর সিটি করপোরেশন থেকে গরুর মাংসসহ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত দাম কার্যকর করার ব্যাপারে সিটি করপোরেশনগুলোর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি এখনো। টিসিবি এরই মধ্যে ডাল, চিনি ও তেল এই তিনটি পণ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে, তবে তা এতটাই সীমিত যে বাজারে তার কোনো প্রভাবই পড়ছে না।
রোজার মাসকে কেন্দ্র করে ভোগ্যপণ্যের বাজারে এ আপদ নতুন নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজের বাজারমূল্যে হঠাৎ অস্থিতিশীলতা লক্ষণীয়। এ যেন রেসের ঘোড়া। মাত্র এক সপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৪ টাকায় ছিল তা একলাফে কোথাও ২৮ কোথাও ৩৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর অতিরিক্ত মুনাফার লোভই রমজানে মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নেই বললেই চলে। টিসিবির মাধ্যমে বাজারে হস্তক্ষেপ আরো বাড়ানো, নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু মূল্যবৃদ্ধিই নয়, বাজারে যেসব খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে, তার মান নিয়েও রয়েছে অনেক সংশয়। ক্রেতাদের অভিযোগ, বেশির ভাগই নিম্নমানের এবং ভেজালযুক্ত। এসব কিনে তাঁরা প্রতারিত হচ্ছেন। জনস্বাস্থ্যেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
রাষ্ট্রের কর্তব্য ভোক্তা তথা নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা। ক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন তা নিশ্চিত করা। সরকারের শীর্ষস্থানীয়দের আশ্বাস আমরা অবশ্যই পেতে চাই, একই সঙ্গে তার বাস্তবায়নও দেখতে চাই। রোজা কেন্দ্র করে হরিলুটের হীন চেষ্টা অবশ্যই তাঁদের অজানা নয়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করছি, অন্তত এবার রোজা ও ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা হবে।