সরকারের বেঁধে দেয়া ফ্লাইট সংখ্যার কারণে আকাশপথের টিকেটও ফুরিয়ে গেছে। নির্ধারিত সংখ্যার বাইরে টিকেট বিক্রি করতে পারছে না এয়ালাইন্সগুলো। চাপ সামলাতে বিধি-নিষেধ শিথিল করে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।
এয়ারলাইন্সগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে ৫০ থেকে ৭০টি একমুখী ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। ইউএস-বাংলা এ মৌসুমে প্রায় ৫৮টি একমুখী অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে জনসাধারণের চলাচলের বিধি-নিষেধ আরোপ হওয়ায় ফ্লাইট সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।
৫ই এপ্রিল থেকে সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। পরে ২১শে এপ্রিল থেকে কক্সবাজার ছাড়া অভ্যন্তরীণ সব রুটে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। সীমিত পরিসরে বিমান বাংলাদেশসহ তিনটি এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহন করছে। বর্তমানে ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক ৩টি, সিলেটে ২টি, সৈয়দপুরে ২টি, যশোরে ২টি এবং বরিশাল ও রাজশাহীতে ১টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বিমান বাংলাদেশ চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক ৩টি, যশোর, সিলেট, সৈয়দপুর ও বরিশালে ২টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
আপাতত রাজশাহী রুটে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে বিমান। এসব এয়ারলাইন্সে ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, সৈয়দপুরের একমুখী ভাড়া সর্বনিম্ন ৩৪শ’ টাকা। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সোমবার দুপুরের পর থেকেই টিকেটের মূল্য লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। শ্রেণী ও রুটভেদে টিকেট ৫৪০০ থেকে ১০৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ৮০ শতাংশ টিকেট ফুরিয়ে গেলেও ফিরতি টিকেট সর্বনিম্ন মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। তবে ১৬ মে’র পরবর্তী ফিরতি টিকেট দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদ শেষে ঢাকা ফেরত যাত্রীদের চাহিদা বেশি থাকায় ওই সময় টিকেটের দাম বাড়তি বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।
এয়ারলাইন্সগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, ৬ই মে থেকে লকডাউন শিথিল হতে পারে এমন আশায় নির্ধারিত ১১টি ফ্লাইটের বাইরে কিছু টিকেটি বিক্রি করা হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ায় বিক্রিত টিকেট নিয়ে এখন বিপদে পড়েছেন তারা। অতিরিক্ত টিকিট চলমান ফ্লাইটের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই মুহূর্তে সরকার বাড়তি ফ্লাইটের অনুমতি না দিলে অনেক টিকেট বাতিল করতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহন করছে। কিন্তু বেবিচকের বেঁধে দেয়া ১১টি ফ্লাইট বর্তমানে ৬টি রুটে আসা-যাওয়া করছে। যা সাধারণ সময়ে চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। যেহেতু এয়ারলাইন্সগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ফ্লাইট পরিচালনা করে সেহেতু ফ্লাইট বাড়ালে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব হতো। পাশাপাশি এয়ারলাইন্সগুলো করোনার কারণে যে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং মেজবাহ-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের সরকার থেকে ফ্লাইট সংখ্যা বেঁধে দেয়া হয়েছে। আজ পর্যন্ত ১১টি ফ্লাইট ৬টি গন্তব্যে যাওয়া-আসা করছে। আগামীকাল কী হবে তা বলতে পারছেন না বলে জানান, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম।