ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশে তরলিকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আবারও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বেসরকারিখাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১ হাজার ৩৯১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৪৮ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে।
নতুন এ দাম রোববার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হবে। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিইআরসি।
এর আগে গত ৩ মার্চ এলপিজির দাম বাড়ায় বিইআরসি। সে সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১ হাজার ২৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এলপিজি গ্যাসে কেজিপ্রতি ৪ টাকা বেড়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে এপ্রিল মাসের জন্য এলপিজি মূসকসহ কেজিপ্রতি ১১৫ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা করা হয়েছে। সে হিসাবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ১ হাজার ৪৩৯ টাকা। ফলে মার্চে তুলনায় এপ্রিলে গ্রাহককে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজিতে ৪৮ টাকা বেশি দিতে হবে।
ঘোষণা অনুযায়ী, মোটরগাড়ির জন্য অটোগ্যাসের দামও বর্তমানে মূসকসহ প্রতি লিটার ৬৪ দশমিক ৭৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৭ দশমিক ০২ টাকা করা হয়েছে।
জানা গেছে, এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তি মূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সৌদি সিপি অনুসারে এপ্রিলে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে টনপ্রতি ৯৪০ এবং ৯৬০ ডলার, মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় এপ্রিলের জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতি কেজি এলপিজির সর্বোচ্চ মূল্য ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা ধরে এপ্রিলে সাড়ে ৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৬৬০ টাকা, ১২ কেজির দাম ১৪৩৯ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির দাম ১৪৯৯ টাকা, ১৫ কেজির দাম ১৭৯৯ টাকা, ১৬ কেজির দাম ১৯১৯ টাকা, ১৮ কেজির দাম ২১৫৯ টাকা, ২০ কেজির দাম ২৩৯৯ টাকা, ২২ কেজির দাম ২৬৩৯ টাকা, ২৫ কেজির দাম ২৯৯৮ টাকা, ৩০ কেজির দাম ৩৫৯৮ টাকা, ৩৩ কেজির দাম ৩৯৫৮ টাকা, ৩৫ কেজির দাম ৪১৯৭ টাকা এবং ৪৫ কেজির দাম পাঁচ হাজার ৩৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয়ের পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির উৎপাদিত এলপিজির দাম পরিবর্তন করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এলপিজি দাম সমন্বয় করা হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম মানেন না ব্যবসায়ীরা। খুচরা পর্যায়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড়শ থেকে ২০০ বেশি দামে বিক্রি হয় এলপিজি সিলিন্ডার। ফলে এলপিজি ব্যবহারে বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তা আর মুনাফা লুটছে কোম্পানি, ডিলার আর খুচরা ব্যবসায়ীরা।