আরেক দফা বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারের কারণে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৭ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
রোববার (১৭ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত নিত্যপণ্যের মজুত পরিস্থিতি, আমদানি ও দাম নির্ধারণ নিয়ে বৈঠকে তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী ও সচিব এ প্রস্তাব অনুমোদন দিলে তা বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।
বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামানের সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিতরণকারী কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম (প্রতি লিটার) আমরা ১৫৩ টাকা নির্ধারণ করেছিলাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছিল তাই তারা ৮-১০ দিনের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করেছিলেন। ২০১১ সালের আইন অনুযায়ী প্রতি ১৫ দিন অন্তর ট্যারিফ কমিশন অ্যানালাইসিস করে সুপারিশ করবে। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রিফাইনারিদের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্য নির্ধারণ করি। পরে রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন তাদের অফিসিয়াল প্যাডে এটা ডিক্লেয়ার করে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, গত মাসে উনারা (তেল উৎপাদনকারী) যে আবেদন করেছিলেন গত ৪ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন চিনি ও তেলের ক্ষেত্রে আমাদের রিপোর্ট দেয়। পেঁয়াজের বাজার অস্থির ছিল। গত এক সপ্তাহে আমরা স্পেশাল ফোকাস দিয়ে, আল্লাহ রহম করেছে, পেঁয়াজের বাজারটা মোটামুটি একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছি।
তেলের বিষয়ে আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, উনাদের (রিফাইনারি কোম্পানি) প্রস্তাব ছিল বোতলজাত প্রতি লিটার সায়াবিন তেল ১৬৮ টাকা করার। ট্যারিফ কমিশন একাধিকবার বসে অ্যানালাইসিস করে ১৬২ টাকা (বোতলজাত সায়াবিন তেল) করার সুপারিশ করেছে। এটা ছিল সেপ্টেম্বর মাসে অ্যাভারেজ রিপোর্ট। আজ দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে ১৬০ টাকা। যেটার আগে দাম ছিল ১৫৩ টাকা।
সভায় খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, পাম তেল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে নির্ধারিত দাম- খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ ও পাম তেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা।
এ প্রস্তাব বাণিজ্য সচিবের কাছে উপস্থাপন করা হবে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, সচিব মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এটি চূড়ান্ত করার পর রিফাইনারিদের জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে রিফাইনারিরা তাদের প্যাডে এটি ঘোষণা করবেন।
মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এতে ভারতের ওপর পেঁয়াজ আমদানির নির্ভরতা কমবে। আমি ধারণা করছি, পেঁয়াজের বাজার আর অস্থির হবে না। পেঁয়াজে আমরা স্বস্তি দিতে পারবো, এ প্রত্যাশা আমরা ব্যক্ত করতে পারি।
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে- চিনির রেগুলেটরি ডিউটি কবে থেকে কার্যকর হচ্ছে তা অ্যাসেসমেন্ট করে মানুষকে একটু জানিয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।