আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল হবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। ওই ফলাফল প্রকাশের দিনটি সামনে রেখে আলু সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হিমাগারে ২৪ মণ মিষ্টি মজুত করেছিলেন কিশোরগঞ্জের এক ব্যবসায়ী। এ ছাড়া পবিত্র রমজানে বিক্রির উদ্দেশ্যে অন্য কয়েকজন ব্যবসায়ী একই হিমাগারে মজুত করেছিলেন ১৫ মণ খেজুর। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। খবর পেয়ে সেগুলো ধ্বংস করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ শাখা ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে পাকুন্দিয়া উপজেলার বড় আজলদীতে অবস্থিত এগারসিন্দুর কোল্ড স্টোরেজে অবৈধভাবে মিষ্টি ও খেজুর মজুত করে রাখা হয়েছে, এমন খবর পায় অধিদপ্তর। পরে ওই সংবাদের ভিত্তিতে অধিদপ্তরের লোকজন পুলিশের সহায়তায় ওই কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালান। অভিযানে তাঁরা ২৪ মণ নষ্ট মিষ্টি এবং ১৫ মণ মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দ করেন। এরপর ওই মিষ্টি ও খেজুর জনসমক্ষে ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ নষ্ট মিষ্টি ও খেজুর সংরক্ষণ করায় কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের সহকারী পরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, আসন্ন মে মাসের ৬ তারিখে এসএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফলকে কেন্দ্র করে আলুর হিমাগারে বিপুল পরিমাণ মিষ্টি মজুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি রোজা উপলক্ষে একই জায়গায় মজুত রাখা আছে খেজুর। এ জন্য তাঁরা অভিযান পরিচালনা করেন। ওই অভিযানে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শংকর চন্দ্র পালসহ পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইব্রাহীম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে কখনো এভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানকে মিষ্টি সংরক্ষণ করতে দেখা যায়নি। বর্তমানে দুধের দাম কিছুটা কম থাকায় এবং ফলাফলের দিন মিষ্টির ব্যাপক চাহিদার জোগান দিতে এ অসদুপায় অবলম্বন করতে চেয়েছিলেন ওই মিষ্টির ব্যবসায়ী। তবে মিষ্টিগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করার ফলে পচে গেছে। সময়মতো ধরা না পড়লে এসব পচা মিষ্টিই মানুষকে খাওয়ানো হতো। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে রাখা মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুরগুলোতেও ছত্রাক পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
ওই সব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না? জানতে চাইলে ইব্রাহীম হোসেন বলেন, তাৎক্ষণিক কোনো জরিমানা বা শাস্তির আওতায় না আনলেও দ্রুতই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
মিষ্টি ও খেজুরের অবৈধ মজুতের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক মো. আনিসুর রহমান। জবানবন্দিতে তিনি জানান, মিষ্টিগুলো আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের প্রাচীন মিষ্টির দোকান মদন গোপাল সুইট কেবিন মজুত রেখেছিল। এ ছাড়া, খেজুরগুলো রোজা উপলক্ষে মজুত করেছিল ভৈরবের কয়েকজন ব্যবসায়ী। মিষ্টিগুলো প্রায় দেড় মাস আগে এবং খেজুরগুলো তারও আগে রাখা হয়।
সংবাদ উৎসঃ প্রথম আলো