নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার। নতুন করে বেড়েছে চাল, পেঁয়াজ, ময়দাসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের। বাজার করতে নিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে।
বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। শুধু আলু, কচুমুখী ও পেঁপের কেজি ৫০ এর নিচে। মরিচ ২০০-২২০ টাকা কেজি। সবচেয়ে কম দামি চাল কিনতেও লাগে ৫০ টাকা। চিকন ও মাঝারি চালের দাম ৬৫-৭০ টাকা।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ করেন আসগর আলী, থাকেন বাসাবো। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আমাদের তিন বেলা ভালোভাবে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। করোনার কারণে বেতন অনিয়মিত , অন্যদিকে ব্যয় বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কিনতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-৭ টাকা। গত সপ্তাহে যে ময়দা ৩৫ টাকা কেজি পাওয়া যেতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ১৬ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ১১০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা দরে।
কদমতলা ওয়াসা রোডের মুরগি ব্যবসায়ী রাজব আলী বলেন, দুই মাসের বেশি সময় ধরে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম বেড়েছে। খাদ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে।
টিসিবির হিসাবে, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ টাকা। আগের মাসেও প্রায় একই পরিমাণ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন করে এই সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। অর্থাৎ, গত সপ্তাহে ১৬০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি পাওয়া যেতো।
বাজারের তথ্য বলছে, নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি দরে যে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন, তা আজ বিক্রি করছেন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তারা আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪২ টাকা কেজি দরে। এই সপ্তাহে বিক্রি করছেন ৫০ টাকা কেজি দরে।
কাওরানবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ময়নাল হোসেন বলেন, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। তিনি বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে বলে তার ধারণা।
এদিকে নতুন করে চিকন চালের কেজিতে বেড়েছে এক টাকার বেশি। একইভাবে মাঝারি চালের কেজিতে বেড়েছে দুই টাকার মতো। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে যে চাল তারা ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছেন, এখন তা বিক্রি করছেন ৬৬ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া বাজারে ডিম প্রতি ডজন ১১৫ টাকা, গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে। ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বাঁধাকপি মাঝারি সাইজের এক পিস ৬০ টাকা, ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর (চায়না) ১৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে দেড় কেজির ইলিশ ১৭০০ টাকা কেজি, এক কেজির ইলিশ ১২০০ টাকা কেজি, ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩২০, কাতল মাছ ২৮০ থেকে ৩০০, কৈ ২০০, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৬০, শিং ৪৫০ থেকে ৬০০, পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ১৫০, নদীর চিংড়ি ৬০০ ও পাবদা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।