করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন তবুও কেনাকাটার ধুম পড়েছে ময়মনসিংহে। ব্যাংক, মার্কেট, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে সবখানেই নেমেছে মানুষের ঢল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন বলছে, করোনা বিস্তাররোধে কাজ করছেন তারা।
৪ এপ্রিল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজার, গাঙ্গিনারপাড়, রেলওয়ে স্টেশন, মেছুয়া বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
অটোরিকশা চালক মোতালেব মিয়া জানান, আজ শহরে যে পরিমাণ মানুষজন দেখা যাচ্ছে, সাধারণত ঈদ ছাড়া এত মানুষ শহরে দেখা যায় না। তাছাড়া আগামীকাল থেকে লকডাউনের কথা ভেবে মানুষ অনেক বেশি কেনাকাটা ও বাজার করছেন।’
তিনি আরও বলেন,‘আমি সারাদিন গাড়ি চালাব, সন্ধ্যার পর বাজার করব। বাজার করে জমিয়ে রাখার সাধ্য আমার নাই।’
বড় বড় মার্কেটে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও ফুটপাতে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। নগরীর গাঙ্গীনারপাড় এলাকার ফুটপাতে গার্মেন্টসের প্যান্ট-শার্ট বিক্রেতা শাকিব মিয়া বলেন, লকডাউন সামনে রেখে মানুষের কেনাকাটা দেখে মনে হচ্ছে, মার্কেট আর কোনোদিন খুলবে না। তবে, সবাই কমবেশি মাস্ক ব্যবহার করছেন বলেও জানান তিনি।
বাচ্চার জন্য জামা কিনতে আসা ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, লকডাউন বন্ধ থাকবে ভেবে মানুষ কেনাকাটা বেশি করছে। তবে, আপনি কেন মাস্ক ব্যবহার করেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তাই মাস্ক খুলে পকেটে রেখেছিলাম। তবে, আমি শুধু করোনার জন্য মাস্ক ব্যবহার করি না। ধুলাবালি থেকে বাঁচতে করোনার আগে থেকেই মাস্ক ব্যবহার করি।’
সাইফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘মেয়ের জন্য জামা-কাপড় কিনতে এসেছি। এসে আমি হতবাক হয়ে গেলাম, বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। তারা কোনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না।’
জামা বিক্রেতা জাহিদ মিয়া বলেন, ‘মেয়ের জন্য জামা-কাপড় কিনতে এসেছি। এসে আমি হতবাক হয়ে গেলাম, বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। তারা কোনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না।’ ‘লকডাউনের কারণে শহরে অনেক বেশি ভিড়। বন্ধ থাকবে ভেবে মানুষ হুমড়ি খেয়ে কেনাকাটা করে স্টক করছে। বেচাকেনাও অন্যান্য দিনের চাইতে দ্বিগুণ।’
ঢাকাগামী এক লোক জানান, ঢাকায় তিনি ছোটখাটো ব্যবসা করেন। শিশু মেয়ের মৃত্যুতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে, কবে লকডাউন ছাড়ে তার কোনো ঠিক নেই। তাই আজই পরিবার নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন তিনি।
এদিকে লকডাউনে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ময়মনসিংহে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। এসময় মাস্ক না পরায় অনেককেই জরিমানা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাইদুল ইসলাম।
লকডাউন সফল করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নগরীর আটটি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।