মো. আবদুল কাদেরঃ
দেশে নতুন করে বাড়লো এলপি গ্যাসের দাম। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ভোক্তাদের। অসহায়ত্বের চিহ্ন ভেসে উঠছে চোখেমুখে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১২কেজি এলপি গ্যাসের মূল্য ১৩৯১ টাকা নির্ধারণ করে। যা আগের দামের তুলনায় ১৫১ টাকা বেশি। গত মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের মূল্য ছিলো ১২৪০ টাকা।
গত জানুয়ারি মাসে ১১৭৮টাকা দাম থাকলেও এখন ২১৩টাকা বাড়িয়ে ১৩৯১ করা হয়েছে।
গ্যাসের দামের পাশাপাশি প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে। এতে চরম হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এলপিজির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে বিইআরসির সদস্য মকবুল ই ইলাহি চৌধুরী ভোক্তা কণ্ঠকে বলেন, ‘এলপিজির দাম বৃদ্ধি করা হয়নি, দাম সমন্বয় করা হয়েছে। সমন্বয় করতে গিয়ে দাম বেড়েছে।’
এসময় তিনি বলেন, সৌদি সিপি অনুসারে ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে প্রতি টন ৮৯৫ এবং ৯২০ ডলারে উঠেছে। যা গতমাসে ছিল ৭৭৫ ডলার। প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় মার্চ মাসের জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও বিইআরসির এই কর্মকর্তা জানান, আমরা শুধু গণশুনানির নির্দেশনা অনুসারে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে একটা দাম নির্ধারণ করে থাকি। যা বাড়তে কিংবা কমতে পারে।
এসময় ভোক্তাদের ক্ষোভের কথা বললে তিনি বলেন, ‘এতে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা গণশুনানির নির্দেশনার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি।’
‘শুনছি গ্যাসের দাম আবার বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ছে মানি জিনিসের দামও বাড়বে। এমনিতেই সবকিছুর দাম বেড়েই চলছে। আগের মতো খাবার কিনতে পারি না৷ এক বেলা খাবার খেয়ে দুই বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। তারপরও দিন আল্লাহ নিয়ে যাচ্ছে।’
কথাগুলো বলছিলেন, রাজধানীর রিকশাচালক ওমর ফারুক। এরকম হাজারো ওমরের গল্প রয়েছে রাজধানী জুড়ে।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাবিত জাবির বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন সব থেকে বেশি চাহিদা এলপি গ্যাসে। সরকার তাদের স্বায়ত্ত্বশাসিত গ্যাসের উপর চাপ কমাতে এলপি গ্যাসের বিকল্প উৎসাহিত করে এখন জনগণকে এই গ্যাসের দাম বাড়িয়ে বিপাকে ফেলাটা এক রকম চরম হীনমন্যতা। বাজারে খাবার সবজির পাশাপাশি যদি এই গ্যাসের দামও বৃদ্ধি পায় তবে আমাদের জীবন যাত্রা পরিচালনা কষ্টকর হয়ে যাবে।’ সরকারকে এই খাতে ভর্তুকি দেয়ার আহ্বান জানান, এই শিক্ষার্থী।
গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল আমদানি নির্ভর এই জ্বালানির সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য ধরা হবে। সৌদির দর উঠানামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠানামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে।
আরইউ