ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জানা যাবে আগামীকাল (মঙ্গলবার)। এর আগে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে নাপা সিরাপের নমুনা নিয়ে গতকাল ঢাকায় ফেরেন তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঔষুধ প্রশাসনের প্রতিনিধি দল।
সোমবার (১৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক আইয়ুব হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে দুটি প্রতিনিধিদল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস পাঠানো হয়েছিল। একই সঙ্গে তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে হিসেবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) যেকোনো সময়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাপা সিরাপ খেয়ে মৃত্যুর মূল কারণ, তখনই হয়তো জানা যাবে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই সারাদেশের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ঔষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা পাঠিয়েছি। সারাদেশেই নির্দিষ্ট ওই ব্যাচের নাপা সিরাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আশা করছি ঘটনার মূল কারণ খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসবে।
দেশে কোন অবৈধ ও নকল ওষুধের প্রতিষ্ঠান নেই দাবি করে আইয়ুব হোসেন আরও বলেন, দেশে ভেজাল ওষুধ নির্মূলে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে আমাদের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ প্রশাসনও কাজ করছে। আমরা তথ্য পেলে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এর আগে গতকাল (১৩ মার্চ) শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিশুর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আসলে রহস্যজনক বিষয়। কী করণে ওষুধটি খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করল, ওষুধটিতে কী-বা এমন উপাদান ছিল, এই রহস্য উদঘাটনে কিছুটা সময় লাগবে।
গত ১০ মার্চ রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন স্বজনরা। মৃত দুই শিশু দুর্গাপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক ইসমাঈল হোসেন খানের ছেলে।
ওই ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।